নবীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যুবতীকে গণধর্ষণের অভিযোগ
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ জুলাই ২০২১, ৮:২৫ অপরাহ্ণহবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে এক যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ জুলাই) নির্যাতিতা যুবতীর মা হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ হালিম উল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘ শুনানী শেষে মামলাটি ৩ দিনের মাঝে এফআইআর গণ্যে মামলা রুজু করার জন্য নবীগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার ওমরপুর গ্রামের এক নারী তার স্বামীর সাথে বনিবনা না থাকায় উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারে তার ১৯ বছরের মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করে। বিষয়টি নজরে আসে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোলডুবা গ্রামের হীরা মিয়ার পুত্র বজলুর রশীদের। গত ২৫ জুন বিকেলে ওই নারী নবীগঞ্জে ডাক্তার দেখাতে রওয়ানা হলে রাস্তায় দেখা হয় চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ এর সাথে। বজলুর রশিদ ও তার দুই সহযোগী উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন এর ছেলে অজুদ মিয়া ও আব্দুল জলিল এর পুত্র রিপন মিয়া সুযোগ বুঝে ওই দিন রাতের বেলা ভিকটিমের বাসায় গিয়ে দরজা খুলে ভিকটিমকে তার মা কোথায় জিজ্ঞাস করে জোরপূর্ব ঘরে প্রবেশ করে।
এ সময় চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ ও তার সহযোগীরা ভিকটিমকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একের পর এক ধর্ষণ করে। পরে ভিকটিমের মা বাসায় এসে মেয়েকে কান্নারত অবস্থায় দেখতে পেয়ে ঘটনা জিজ্ঞাস করলে সে সবকিছু তার মাকে জানায়। ভিকটিমকে নিয়ে তার মা হাসপাতালে যেতে চাইলে ধর্ষণকারীরা তাকে বাধা দিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। পরে ঘটনার তিনদিন পর কৌশলে লুকিয়ে ভিকটিমকে (গত ২৮ জুন) হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়।
এদিকে বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার জন্য চেয়ারম্যান বজলুর রহমান বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে সোমবার ভিকটিমের মা বাদী হয়ে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এডভোকেট আবুল হাশেম মোল্লা মাসুম মামলা দায়ের এর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ডালিম আহমেদ জানান, মামলা দায়েরের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ বলেন, ধর্ষণ মামলার বাদী পেয়ারা বেগম তার স্বামী সাকিল মিয়াকে আসামী করে বেশ কিছুদিন পূর্বে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি আমি জানতে পেরে উভয় পক্ষের বিরোধ মীমাংসার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং আপোষে নিস্পত্তি করার জন্য উভয় পক্ষ মতামতও দেয়। শালিস বিচারের উভয় পক্ষ বিষয়টি সমাধান করা হয়। কিন্তু পেয়ারা বেগম পরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেননি। স্বামী সাকিল মিয়াকে আসামী করে পেয়ারার দায়েরকৃত মামলা তদন্ত করে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এবং পেয়ারার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ মামলার চুড়ান্ত রিপোর্ট দেয়। মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন যাওয়ায় পেয়ারা সন্দেহ করে চুড়ান্ত রিপোর্ট যাওয়ার সাথে আমার সম্পৃক্তরা রয়েছে তাই উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আশা করি আমি আদালতে ন্যায় বিচার পাবো।