হবিগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসে শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানি !
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ আগস্ট ২০২০, ৪:৪৭ অপরাহ্ণহবিগঞ্জে এমপিও ভুক্তির ফাইল নিয়ে চরম ভোগান্তিতে আছেন বিভিন্ন বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা। কারণ ছাড়াই অনেকের ফাইল আটকে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে অফিসে হট্টগোল করেছেন শিক্ষকরা। তবে শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, বিধিবহির্ভূত আবেদন হওয়ায় তা আটকে দেয়া হয়েছে।
শিক্ষকরা জানান, করোনাকালীন দুর্যোগ মুহূর্তে নতুন এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন দেয়ার জন্য গত রমজান মাসে অনলাইনে আবেদন চায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। এ সময় আবেদনকারীর থেকে সুবিধা নিয়েছেন জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রুহুল্লাহ।
অনেকের অভিযোগ, সুবিধা না পেয়ে তাদের ফাইল বাতিল করেছেন। এমনকি কিছু শিক্ষকের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েও ফাইল বাতিল করা হয়েছে। গত জুন মাসে বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীরা দ্বিতীয়বার আবেদনের সুযোগ পেলে এ সময়ও একই আচরণ করা হয়। চলতি মাসে আবারও তারা আবেদনের সুযোগ পান।
জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে নতুন এমপিও ও উচ্চতর গ্রেড মিলে প্রায় ২০০ শিক্ষক কর্মচারী অনলাইনে আবেদন করেন। অনলাইনের প্রাপ্ত আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই শেষে অগ্রায়ন করেন বিভিন্ন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। গত ২১ আগস্ট জেলা শিক্ষা অফিস থেকে আবেদন অগ্রায়ন করার শেষ দিন ছিল।
ওই দিন বিকালে আবেদনকারী শিক্ষক কর্মচারীরা জানতে পারেন তাদের অনেকের ফাইল বাতিল হয়েছে। কোনো কোনো শিক্ষক তাদের ফাইল বাতিলের কারণ জানতে চাইলে তারা কোনো সদুত্তর পাননি। পরে শিক্ষকরা জানতে পারেন ফাইল বাতিলের কোনো কারণ উল্লেখ নেই।
সন্ধ্যায় আবারও শিক্ষক-কর্মচারীরা জড়ো হন জেলা শিক্ষা ভবনে। সেখানে ফাইল বাতিলের সঠিক কারণ তাদের জানানো হয়। এ সময় শিক্ষকের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
তরপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান ‘জাগো নিউজ’কে জানান, তিনিসহ তার স্কুলের ৫ জন শিক্ষক কর্মচারী আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে ১ জন শিক্ষকের আবেদন বাবদ তিনি জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। তিনি সমুদয় টাকা ফেরত চান।
রত্না উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আবু তাহের ‘জাগো নিউজ’কে বলেন, ফাইল বাতিলের যে কারণ তিনি উল্লেখ করেছেন তার সঠিক ব্যাখ্যা তিনি পাননি। একই রকম আবেদন করে কয়েকজন শিক্ষকের আবেদন অগ্রায়ন করেছেন। আর আমাদের ফাইল বাতিল করেছেন।
বক্তারপুর আবুল খায়ের উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক কামাল হুসেন ‘জাগো নিউজ’কে বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার কারণ ছাড়াই শিক্ষকদের হয়রানি করছেন। অযৌক্তিক কারণে তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তরপ উচ্চ বিদ্যালয়, রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আশেরা উচ্চ বিদ্যালয়, বানিয়াচং উপজেলার রত্না উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, নবীগঞ্জের এনএসপি উচ্চ বিদ্যালয় ও আজমিরীগঞ্জের পশ্চিমভাগ উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীর ফাইল বাতিল করেছেন।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল্লাহ ‘জাগো নিউজ’কে জানান, মোট আবেদন হয়েছে ১৫৬টি। এর মাঝে বাতিল হয়েছে ৪০টি। বাকি ১১৬টি আবেদনই অগ্রায়ন করা হয়েছে। যাদের বাতিল হয়েছে তাদের আবেদন সরকারি বিধিবহির্ভূত ছিল। নীতিমালা কাভার না করায় তা দেয়া সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, তাদের অনেকেরই চাকরির ১০ বছর পূর্ণ হয়নি। অনেকে আবার নীতিমালা বহির্ভূতভাবে বেতন বাড়ানোর আবেদন করেছেন। এ ফাইলগুলো আমি ছাড়লেও মন্ত্রণালয়ে গিয়ে আটকে যাবে। আমাকে জবাবদিহি করতে হবে। তাদের বলা হয়েছে- পরবর্তীতে যেন আবারও তারা আবেদন করেন।