নবীগঞ্জে ১নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নে আলোচনায় যারা
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ অক্টোবর ২০২০, ১২:০৪ অপরাহ্ণদেশে সময় ঘনিয়ে আসছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের। আইন অনুযায়ী আগামী বছরের মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের আগে ইউপি নির্বাচন শুরু করতে হবে, আর শেষ করতে হবে জুনের আগেই। ২০১৬ সালের ২২ মার্চ শুরু হয়ে কয়েক ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয় ঐ বছরের ৪ জুন। আইন অনুযায়ী কোনো ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
এই হিসাব অনুযায়ী, আগামী বছরের মার্চে যেসব ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ বছর মেয়াদ হবে, সেসব ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে এ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে। আর যেসব ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ আগামী বছরের জুনের প্রথম দিকেই শেষ হবে, সেসব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ করতে হবে এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে। ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ ও নির্বাচন শুরুর সম্ভাব্য হিসাব করলে ভোটের এখনো ২ থেকে ১০ মাস বাকি থাকলেও এখন থেকেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও সদস্য (মেম্বার) প্রার্থীরা।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী হালচাল নিয়ে ‘‘জাগো নিউজ’’ এর ধারাবাহিক প্রতিবেদন এর ধারাবাহিকতায় নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের আজ তুলে ধরা হলো ১ নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়ন এর হালচাল।
প্রথমেই ইউনিয়ন পরিষদের পরিচিতি: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় ভাটি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ১ নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়ন। ইউনিয়ন পরিষদ স্থাপনের সময় স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর কর্তৃক নবীগঞ্জ উপজেলায় বড় ভাকৈর নামে ১ টি ইউনিয়ন গঠিত হয়। পরবর্তিতে ১৯৭৪ সালে তা বিভক্ত হয়ে ২টি ইউনিয়নে রূপ লাভ করে। একটি হচ্ছে বড় ভাকৈরপশ্চিম ইউনিয়ন এবং অন্যটি বড় ভাকৈর পূর্ব। এরপর থেকেই ওই ইউনিয়ন ১ নং বড় ভাকৈর পশ্চিম নামে নামকরণ হয়।
সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে আলাপকালে ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন চৌকি গ্রামের ধীরেন্দ্র চন্দ্র দাশ। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন অধীর চন্দ্র মহালদার। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন মতিলাল দাশ। পরে ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৮ ও ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৩ এবং ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ৩ বার বিজয়ী হয়ে এক টানা ১৬ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন আশুতোষ দাশ। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন সত্যজিত দাশ। এরপর ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী হয়ে দায়ীত্বপালন করেন সমর চন্দ্র দাশ। সবশেষ ২০১৬ সালে গেল নির্বাচনে ফের বিজয়ী হন সত্যজিত দাশ। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সত্যজিৎ দাশ (চশমা) প্রতীকে (৩৩৭৩) ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমর চন্দ্র দাশ (নৌকা) পেয়েছেন (২২৪১) ভোট।
১ নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নটি হাওর বেষ্টিত এলাকা। ইতিপূর্বে ওই ইউনিয়নে যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তবে বর্তমান সরকারের আমলে অনেকটা উন্নতি হয়েছে। ওই ইউনিয়নে প্রায় ১৪ হাজারের মত ভোটার রয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
নির্বাচনী প্রার্থী হবার আলোচনায় রয়েছেন: নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান সমর চন্দ্র দাশ, বর্তমান চেয়ারম্যান সত্যজিৎ দাশ, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহিদ তালুকদার, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক গৌতম কুমার দাশ, বিগত নির্বাচনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী স্মৃতিভূষন দাশ, তরুন সমাজ সেবক সাবেক ছাত্রনেতা বর্তমান ফ্রান্স প্রবাসী আলিমুল ইসলাম, সিলট মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের প্রচার সম্পাদক রাজেশ দাশ রাজু, জাতীয় পার্টি নেতা ভুলা দাশ, প্রবাসী রঙ্গলাল দাশ। তারা বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রার্থীতার কথা জানান দিচ্ছেন। ওই ইউনিয়নের প্রধান সমস্যা হচ্ছে মাদক। সকল গ্রামে গ্রামেই রয়েছে মাদকের ছড়াছড়ি।
বর্তমান চেয়ারম্যান সত্যজিৎ দাশ বলেন, আমার আমলে অনেক উন্নয়ন হয়েছে এই ইউনিয়নে যা জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে ।
সাবেক চেয়ারম্যান সমর চন্দ্র দাশ বলেন, আগামীতেও তিনি নৌকার মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার সকল সমস্যা সমাধানে নিরলশভাবে কাজ করবেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এড. শাহিদ তালুকদার বলেন, দলীয়ভাবে যদি নির্বাচনে অংশগ্রহনের সিদ্ধান্ত আসে। তাহলে তিনি তিনি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি। এবং তিনি নির্বাচিত হলে ইউনিয়নকে আধুনিক ও মডেল ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে গড়ে তুলবেন। তিনি সব সময় এলাকাবাসী সুখে-দুঃখে পাশে আছেন। এলাকার উন্নয়নে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আলিমুল ইসলাম বলেন, তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহন করার জন্য কিছু দিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন। তিনি অবহেলিত এলাকাবাসীর জন্য কাজ করতে চান।