হবিগঞ্জ জেলার আলোচিত ইউনিয়ন নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর। এবার এই ইউনিয়নে নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিকে মাইনাস করে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা সাবের আহমেদ চৌধুরী।
উল্লেখ্য, ৩৬০ আউলিয়ার পূণ্যভূমি বৃহত্তর সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার অন্যতম উপজেলার নাম নবীগঞ্জ। নবীর নামানুসারে ঐতিহ্যবাহী এ উপজেলার নাম নবীগঞ্জ করা হয়েছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে আড়মোড়া দিয়ে ওঠা এই নবীগঞ্জ সুন্দর্যের যেন কোনো অংশে কম নেই এর কোন এলাকা। এ উপজেলার অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দূর্গম পাহাড়ী অঞ্চল দিনারপুর পরগনা। দিনারপুরে রয়েছে দর্শনীয় স্থান যেখানে পর্যটকরা একবার হলেও ঘুরতে আসেন এই জনপদে। অসংখ্য বাঁশ ও গাছ ঘেরা এ পরগনার অন্যতম ইউনিয়ন গজনাইপুর। এই ইউনিয়নে রয়েছে হরেক রকমের পাহাড় টিলাসহ অনেক ঐহিত্যবাহী স্থান।
গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন মোঃ রাজা কাজী। এর আগে চেয়ারম্যান ছিলেন দেওয়ান আলতাবুর রহমান, তবে উনার কার্যকাল জানাযায়নি। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন মোঃ আব্দুল আলী। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন আলতাব মিয়া চৌঃ। পরে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন দেওয়ান অলি আহমদ চৌধুরী। ১৯৮২ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত টানা ২ বার ১০ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন শাহ নওয়াজ। ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন ইমদাদুর রহমান মুকুল। পরে ফের নির্বাচিত হয়ে শাহ নওয়াজ ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন। পরে ২০০৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুই দফায় অর্থাৎ ১৩ বছর একটানা নির্বাচিত হয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন আবুল খায়ের গোলাপ। সর্বশেষ ২০১৬ সালের নির্বাচিত নৌকা প্রতীকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ইমদাদুর রহমান মুকুল চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়ীত্ব পাল করেন। কিন্তু চাল আত্মসাতের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত হন।
নানা কারণে আলোচনায় গজনাইপুর ইউনিয়নঃ গেল নির্বাচনের পর থেকে যোদ্ধাপরাধ মামলায় কারাগারে রয়েছেন আবুল খায়ের গোলাপ। এনিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা চলছে। তিনি ওই ইউনিয়নের হেভিওয়েট একজন প্রার্থী ছিলেন। ওই এলাকার ঐহিত্য হচ্ছে পাহাড়-টিলা। কিছুদিন পরপরই বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কাটার মহোৎসব শুরু হয়। তখনও জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। মিডিয়ায় প্রকাশ হলে, প্রশাসন চালায় অভিযান। সবশেষ আলোচনা ছিল ‘ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত’ ইস্যূ। করোনা পরিস্থিতিতে গজনাইপুর ইউনিয়নে বিগত চার বছর ধরে ২২৯ জন লোকের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর (১০টাকা) কেজির চাল আত্মসাতের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে চাল চুরির আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে গত ৭ জুলাই ইমদাদুর রহমান মুকুলকে বরখাস্ত সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুব আলী নুরু। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে।
এবার মনোনয়ন পেয়েছেন ছাবের আহমেদ চৌধুরী। জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।