কারামুক্ত হয়ে নেতাকর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত রাহেল

জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ জুলাই ২০২২, ৮:৫৫ অপরাহ্ণ
নির্বাচনি সহিংসতার মামলায় কারাগারে পাঠানোর পরদিন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেলের জামিন পেয়ে মুক্তি পেয়েছেন। কারামুক্ত হয়ে নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন রাহেল চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল। এর আগে মঙ্গলবার (৫ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। বিচারক হাসানুল ইসলাম শুনানি শেষে জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল নবীগঞ্জ শহরের হাসপাতাল এলাকার মৃত গোলাম রব্বানীর ছেলে এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের মেয়ের স্বামী।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০২১ সালের পৌর নির্বাচনের আগের দিন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছাবির আহমেদ চৌধুরীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় ছাবির আহমেদ চৌধুরীর চাচাতো ভাই শফিক আহমেদ চৌধুরীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ ওঠে রাহেল চৌধুরীর নামে। এতে শফিক আহমেদ চৌধুরীর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। দ্রুত তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দীর্ঘ চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। এ ঘটনায় ছাবির আহমেদ চৌধুরীর চাচাতো ভাই হাদিছ মিয়া চৌধুরী বাদী হয়ে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে গত ৩০ মার্চ চার্জশিট দেয় পিবিআই। চার্জশিট আদালত গ্রহণের পর আসামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়।
গতকাল সোমবার (৪ জুলাই) মামলার ২নং আসামী গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। কারাগারে যাওয়ার পরদিন মঙ্গলবার (৫ জুলাই) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রাহেলের জামিন আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। এ সময় আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন- অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্ত টিটু ও বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান ও অ্যাডভোকেট কুতুব উদ্দিন জুয়েল। উভয় পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শেষে জলা ও দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম রাহেলের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এ প্রসঙ্গে আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্ত টিটু বলেন- আমরা আদালতে বিভিন্ন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছি তার মধ্যে অন্যতম হলো, সিআইডি প্রথমে মামলাটি মিথ্যা উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছে,পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার পিবিআই সত্য বলে প্রতিবেদন দেয়, এবং ঘটনাটি ঘটেছে রাতে কে বা কারা রাতের আধারে ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা সঠিক ভাবে কেউ দেখেনি। সবকিছু বিবেচনা করে আদালত আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে জামিন মঞ্জুর করেছেন।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম , সাংগঠনিক সম্পাদক নূর উদ্দিন চৌধুরী বুলবুল, মশিউর রহমান শামীম, নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ ফয়ছল তালুকদারসহ ছাত্রলীগের সহস্রাধিক নেতা কর্মী রাহেলকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। পরে বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা মধ্য দিয়ে হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়ক হয়ে নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নেতাকর্মীদের নিয়ে নিজ বাসভবনে যান গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল।
মুক্তি পেয়ে গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল বলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বিগত পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছিলেন, আমার বিজয় সুনিশ্চত জেনে বিএনপি প্রার্থী ছাবির আহমেদ চৌধুরী পরিকল্পিতভাবে একটি দুর্ঘটনা সংগঠিত করে সেই মামলায় আমাকে আসামী করা হয়। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় সোমবার আমি আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাই পরবর্তীতে জামিন না-মঞ্জুর হলে আমাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। আদালতের মাধ্যমে জামিন পেয়ে আজ আমি মুক্তি পেয়েছে। আমি কারাগারে থাকা অবস্থায় যারা আমার এবং আমার পরিবারের পাশে দাড়িঁয়েছেন তাদের প্রতি এবং পৌরবাসীর প্রতি আমি চির ঋণী।
