কলেজ ছাত্র দ্বীপ হত্যা: আসামিরা ৬ মাস ধরে অধরা !
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ আগস্ট ২০২০, ৪:৩৬ অপরাহ্ণচলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে সিলেট নগরীর টিলাগড়ে খুন হন কলেজছাত্র অভিষেক দে দ্বীপ। ‘সরস্বতী পূজার বিরোধ থেকে’ এ খুনের ঘটনা ঘটে বলে তখন অভিযোগ ওঠে। মামলা হয় ৮ জনের বিরুদ্ধে। কিন্তু পুলিশ গ্রেফতার করতে পেরেছে মাত্র দুই আসামিকে।
এরকম অবস্থায় ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দ্বীপের বাবা দীপক দে।
সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ সাদিপুর এলাকার দীপক দে’র ছেলে অভিষেক দে দ্বীপ গ্রিনহিল স্টেট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
৬ ফেব্রুয়ারি রাতে নগরীর টিলাগড়ে ছুরিকাঘাত করা হয় দ্বীপকে। গুরুতর অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর নগরীর শাহপরান থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘সরস্বতী পূজার শোভাযাত্রায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগকর্মী সৈকত এবং অভিষেক দে দ্বীপের ঝগড়া হয়। এ ঘটনার জেরে দ্বীপ তার অনুসারীদের নিয়ে সৈকতের উপর হামলা করে। এসময় সৈকত ও তার কয়েকজন সহযোগী পাল্টা হামলা চালিয়ে দ্বীপকে ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায়।’
দ্বীপ খুনের পর ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তার বাবা দীপক দে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ছাত্রলীগকর্মী সমুদ্র রায় সৈকতকে (২২)। তিনি টিলাগড়ের গোপালটিলার ২নং সড়কের সল্টু রায়ের ছেলে। এছাড়া একই এলাকার ৩২নং বাসার সজল দের ছেলে সৌরভ দে (২০), রতন দেবের ছেলে পূজন দেব (২৮) ও শংকর দে’র ছেলে সাগর দে’র (২০) নামোল্লেখ করে মামলায় অজ্ঞাত আসামি রাখা হয় আরো ৩-৪ জনকে।
জানা গেছে, ঘটনার দিন দ্বীপ তার অনুসারীদের সৈকতের উপর হামলা চালিয়েছিলেন। পরে সৈকত তার অনুসারীদের নিয়ে পাল্টা হামলা চালান। শাহপরান থানার ওসির বক্তব্যেও এমন তথ্য বেরিয়ে আসে। দ্বীপদের হামলায় আহত সৈকত ভর্তি হয়েছিলেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। মামলা হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরে নগরীর শাপলাবাগ এলাকার রিমেল নামের আরেকজনকে পুলিশ দ্বীপ হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে।
দ্বীপ খুনের ঘটনায় পেরিয়ে গেছে ৬ মাসের বেশি সময়। কিন্তু মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা গ্রেফতার হয়নি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও), নগরীর শাহপরান থানার এসআই শ্যামল সরকার বলেন, ‘অভিষেক দে দ্বীপ হত্যা মামলায় এখনও পর্যন্ত দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ চেষ্টা করছে।’
তবে আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দ্বীপের বাবা দীপক দে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের একমাত্র সন্তান খুন হয়েছে। হত্যাকারীরা চোখের সামনে ঘুরে বেড়ায়। একজন বাবা হিসেবে এটা কীভাবে সহ্য করবো?’
দীপক দে বলেন, ‘৬ মাস হয়ে গেল, পুলিশ আসামিদের ধরতে পারেনি। পুলিশ আন্তরিক হলে আসামিরা অবশ্যই ধরা পড়বে।’