নবীগঞ্জে অনলাইন ক্লাসের জন্য নেয়া হচ্ছে ফি : খবর পেয়ে স্কুলে এমপি !

জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ নভেম্বর ২০২০, ৭:০০ অপরাহ্ণ

করোনায় স্কুল বন্ধ থাকলেও বকেয়া বেতন এবং পরীক্ষার ফি’র জন্য অভিভাবকদের ওপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ ওঠেছে নবীগঞ্জের অধিকাংশ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। এছাড়া বকেয়া বেতন না দিলে আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষার উত্তরপত্র দেওয়া হবে না বলে স্কুল থেকে অভিভাবকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। অপরদিকে অনলাইন ক্লাসের জন্য শিক্ষার্থীদের কাজ থেকে জনপ্রতি ১০০ টাকা করে আদায়েরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে তাৎক্ষণিক বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন করে বেতন-পরীক্ষার ফি,ও অনলাইন ক্লাসের বিল নেয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাম এমপি।
জানা গেছে, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি র.প উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে সরকারি নির্দশনা অমান্য করে বেতন ভাতা, পরীক্ষার ফি ও অনলাইন ক্লাসের বিল নেওয়া হচ্ছে। সকল ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনলাইন ক্লাসের জন্য ১০০ টাকা করে আদায় করার পাশাপাশি এক বছরের পূর্ণ বেতন-ভাতা আদায় করা হচ্ছে। বেতন ভাতা ও অনলাইন ফি না দিলে পরীক্ষা দিতে পারবেন না বলে ছাত্র ছাত্রীদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এনিয়ে অভিভাবকদের তীব্র ক্ষোভ সঞ্চার হয়েছে।
এ বিষয়ে আউশকান্দি র.প.উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, ‘এটা এডহক কমিটির সভাপতি আবুল ফজল সাহেবের সিদ্ধান্ত। আমি কিছু বলতে পারবো না।’
এডহক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল ফজল সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কল রিসিভ না করায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে করোনাকালে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষা ফি (টিউশন ফি) আদায়ে চাপ না দিতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ সময়েও শিক্ষা ফি আদায় করছে। অনেক প্রতিষ্ঠান চাপ দিচ্ছে। আবার ফি আদায় করতে না পারায় অনেক এমপিওভুক্ত ব্যতীত অন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারছে না। অভিভাবকেরাও আর্থিক সমস্যায় আছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থী ফি আদায়ে চাপ না দিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু এই আদেশ অমান্য করে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেতন ও পরীক্ষা ফি আদায় করছে।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. রুহুল্লাহ জানান, আমরা ইতিমধ্যে কিছু অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ খবর নিচ্ছি। মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে, যাতে এই সময়ে বেতন বা ফি নেয়া না হয়। যদি কেউ নিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহি উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে সরকারী কোনো নির্দশনা এখনও আসেনি।’
অপর দিকে বিষয়টি জানাজানি হলে- বৃহস্পতিবার স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজী শাহনওয়াজ মিলাদ ও নবীগঞ্জ উপজেলা ইউএনও শেখ মহি উদ্দিন বিভিন্ন বিদ্যালয়ে জটিকা অভিযান চালান। এসময় নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি র.প উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে বেতন, পরীক্ষার ফি,ও অনলাইন ক্লাসের বিল নেয়া স্থগিত করেন। যাদের বেতন ও অন লাইন ফ্রি নেওয়া হয়েছে তা ফেরত দিতে নির্দেশ দেন।

