তাহিরপুরে মাদ্রাসার নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ !
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ নভেম্বর ২০২০, ৫:০৫ অপরাহ্ণসুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার হিফজুল উলুম আলিম মাদ্রাসার ৬টি পদে নিয়োগে অনিয়ম,দুর্নীতিসহ ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠছে।
এ ব্যাপারে বুধবার(৪ নভেম্বর)নিয়োগ বাতিলের দাবীতে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালক,দুর্নীতি দমন কমিশন,সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করেন জাহাঙ্গীর আলম,রাসেল আহমেদ,অপু মিয়া,শবনম আক্তার,রুবি আক্তারসহ বিভিন্ন পদে আবেদন কারী প্রার্থীরা।
অভিযোগে জানা যায়,সম্প্রতি তাহিরপুর হিফজুল উলুম আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, হিসাব রক্ষক, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, আয়া ও নিরাপত্তাকর্মীসহ ৬টি পদে জনবল নিয়োগের পরীক্ষা নেয়া হয়।
নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও সদস্য তালিমুল ইসলাম দুলালের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে নিয়োগবিধি উপেক্ষা করে নানা অসাধু উপায় অবলম্বন করেন। তাদের আস্থাভাজন প্রভাষক আশিকুর রহমান ও অফিস সহকারী সালেহ আহমদ পছন্দের প্রার্থীদেরকে পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ও উত্তর বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেনে।
এছাড়াও স্থানীয়ভাবে সুযোগ থাকার পরও পরীক্ষা নেয়া হয়েছে সিলেটে। নিয়ম অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির কোন সভাপতি বা সদসের্য আত্নীয় স্বজন পরীক্ষায় অংশ নিলে নিয়োগ বোর্ডে তারা থাকতে পারেন না। কিন্তু বিধি লঙ্গন করে পরীক্ষার্থীর স্বামী কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও আপন ভাই শরিফুল মিয়া,ভগ্নিপতি মহিবুর রহমান কমিটির সদস্য তালিমুল ইসলাম দুলাল নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন। নিয়োগ পরীক্ষার পর ফলাফলে দেখা গেছে মাদ্রাসার সভাপতি আমিনুল ইসলামের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার হিসাবরক্ষক পদে,সদস্য তালিমুল ইসলাম দুলালের আপন ভাই শরিফুল উপাধ্যক্ষ পদে, ভগ্নিপতি মহিবুর রহমান অধ্যক্ষ পদে, এছাড়া অফিস সহকারী পদে মুনতাছির বিল্লাহ, আয়া পদে শাপলা আক্তার ও নৈশ প্রহরী পদে আবু আলীকে নিয়োগে নির্বাচিত করা হয়েছে। এরা প্রত্যেকেই সভাপতির আত্মীয়।
তাহিরপুর হিফজুল উলুম আলীয়া মাদ্রাসার সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মাওলানা আবদুল হান্নান বলেন, নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। নিজ প্রতিষ্টানে ও জেলার নিয়োগ পরীক্ষা না নিয়ে সিলেট নেয়া সরকারী বিধি লঙ্গন কি না এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি কোন সুউত্তর দিতে পারেন নি।
মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাচ্ছু মিয়া জানান, আমি নিয়োগের বিষয়ে কোন কিছু ই জানি না। নিয়মবর্হিভূত ভাবে নিয়োগ নির্বাচনী পরীক্ষা গ্রহন করা হয়। যা সম্পূর্ন অন্যায় ও সরকারী বিধি লঙ্গন।
তবে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, নিয়োগে কোন অনিয়ম করা হয় নি। নিয়ম মেনে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, নিজ উপজেলা ও জেলা সদরে পরীক্ষা না নিয়ে কেন সিলেটের একটি মাদ্রাসায় নেয়া হল সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করব। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মসন সিংহ অনিয়ম ও দূনীতির লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির বিষযয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
সুনামগঞ্জ ১-আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মেয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন,মাদ্রাসায় নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারটি দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।