দেশে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ রেকর্ড শনাক্ত ১৬০২, মৃত্যু ২১
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ মে ২০২০, ৯:৫৩ অপরাহ্ণচলমান পরিস্থিতিতে মে মাস বাংলাদেশের জন্য আক্রান্তের দিক থেকে ‘পিকটাইম’ হবে বলে আগে থেকেই ধারণা করে আসছিলেন দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আট সদস্যের জনস্বাস্থ্যবিদদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আগামী জুনের মাঝামাঝি পর্যায়ে সংক্রমণ সর্বোচ্চ ধাপ অতিক্রম করতে পারে বলে আভাস দিয়েছিলেন তারা। এরপর সংক্রমণ কিছুটা কমে আসতে পারে। তাদের ধারণা বাস্তবে প্রমাণ মিলছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ছে। তবে নমুনা সংগ্রহের পরিমাণ বাড়লে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, নমুনা পরীক্ষা বাড়লে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে- গত কয়েকদিন ধরে এ চিত্র দেখা যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়, নমুনা পরীক্ষার মাত্রা আরও বাড়াতে হবে। এটিকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজারে উন্নীত করা প্রয়োজন। আক্রান্ত ব্যক্তিকে যতদ্রুত শনাক্ত করে আইসোলেশন ও তার সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন করা যাবে, তত দ্রুত এই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। অন্যথায় রোগটি আরও ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়বে।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা গতকাল বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪২টি ল্যাবে ৯ হাজার ৭৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ৮৫ হাজার ১৯৬টি। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ১৯ দশমিক ২১ শতাংশ, মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৬ শতাংশ।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২১ জনের মধ্যে পুরুষ ১৭ জন ও নারী ৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের সাতজন, কুমিল্লার একজন ও রাজশাহী বিভাগের একজন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে রাজধানীর ছয়জন, ঢাকা জেলার দু’জন, গোপালগঞ্জের একজন, মুন্সীগঞ্জের একজন, টাঙ্গাইলের একজন, মানিকগঞ্জের একজন রয়েছেন। আর চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলার দু’জন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একজন, ফেনীর দু’জন ও নোয়াখালীর একজন রয়েছেন। এ ছাড়া সিলেটের একজন এবং রাজশাহী বিভাগের বগুড়ার একজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন দু’জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ছয়জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৫ জন রয়েছেন। হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয় দু’জনকে, হাসপাতালে মারা যান ১৫ জন এবং বাসায় মারা যান চারজন।
চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরে ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ৯ হাজার ১৩৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় তিন হাজার ১০০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। এসব হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৩৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি।
ডা. নাসিমা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানান বুলেটিনে। তিনি বলেন, আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে। নিজের সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন হবেন, সতর্ক থাকবেন। টাটকা শাকসবজি ও প্রোটিনজাতীয় খাবার যেমন ডিম এবং তরল খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ ধূমপান অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।