Logo

৫০ মামলায় বাবা-মা জিম্মায় ৭০ শিশু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
জাগো নিউজ : বুধবার, অক্টোবর ১৩, ২০২১

image_pdfimage_print

আসন্ন শিশু দিবসকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জে এক ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছে আদালত। বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৫০ টি মামলায় ৭০ জন শিশুকে ৬ টি শর্তে বাবা-মা জিম্মায় দেন আদালত। সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনা ও শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, লঘু অপরাধে ৫০ টি মামলায় ৭০ জন শিশুকে সংশোধনের সুযোগ দিয়ে বাবা-মা জিম্মায় দেওয়ায় হয়। এসব শিশুদেরকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মামলায় জড়ানো হয়েছিলো, ক্ষুদ্র একটি অভিযোগে এসব শিশুদের আদালতে হাজিরা দিতে হতো যার ফলে শিশুদের ভবিষ্যত এক অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়ে। তাদের শিক্ষা কার্যক্রমও ব্যহত হচ্ছিল। শিশুদের এসব থেকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে দেন বিচারক।

আদালত মনে করছে কারাগারের পরিবর্তে পরিবারের সদস্যদের সাথে কোমলমতি শিশুরা বেড়ে উঠতে ও সুন্দর জীবন গঠনের সুযোগ পাবে। এসময় বিচারক প্রত্যেক শিশুকে একটি করে ফুল ও একটি ডাইরি দেন।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা শফিউর রহমান বলেন, ৬ টি শর্তে ৫০ টি মামলায় ৭০ জন শিশুকে আদালতে পিতা মাতার জিম্মায় দিয়েছেন, শর্তগুলো হল প্রতিদিন দুইটি ভালো কাজ করা এবং সেগুলো ডাইরীতে লিপিবদ্ধ করা, বাবা মা ও গুরুজনের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা এবং বাবা মায়ের সেবা যত্ম করা ও তাদের কাজে কর্মে সাহায্য করা, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা এবং ধর্মকর্ম পালন করা, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা, মাদক থেকে দূরে থাকা এবং ভবিষ্যতে কোন অপরাধে নিজেকে না জড়ানোর শর্ত দেওয়া হয় । এছাড়া তাদের ডাইরী বছর শেষে আদালতে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেন আদালত। আগামী এক তারা সবাই আমার পর্যবেক্ষনে থাকবেন।

মামলা মুক্তি পাওয়া শিশু শহরের আরপিন নগর এলাকার বাসিন্দা মানিক মিয়া ছেলে সুজন মিয়া বলেন, আদালতকে ধন্যবাদ আমাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদের সংশোধনের সুযোগ দিয়েছেন, আমরা আদালতের দেওয়া শর্তগুলি মেনে চলবো এবং কখনো বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে কোন কাজ করবো না।

দোয়ারাবাজার উপজেলার ফরমান আলীর ছেলে পারভেজ আলম বলেন, পরিবারের মামলায় আমার নাম দেওয়া হয় যার কারণে আদালতে এসে প্রতিনিয়ত হাজিরা দিতে হতো কিন্তু আদালত আজকে আমাদের জন্য যে রায় দিলেন তার জন্য কৃতজ্ঞ, আমি আদালতের সকল আদেশ নিষেধ মেনে চলবো।

এদিকে আদালতের এমন রায়ে খুশি অভিভাবকরা। ছাতক উপজেলার দিঘলী চাকলপাড়া গ্রামের মাসুক আলী বলেন, এ রায়ে আমরা খুশি, ঘরের ছোটখাটো মামলায় আমার ছেলের নাম দেওয়া হয়েছিল আদালত আজকে তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে যে রায় দিয়েছেন এতে আমরা খুশি।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের শিশু ও মানবপাচার ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত পিপি হাসান মোহাম্মদ সাদি বলেন, বিচারক মো. জাকির হোসেন যে রায় দিয়েছেন তার সত্যিই প্রশংসনীয়। এ রায়ের মাধ্যমে দ্রুততার সাথে শিশুদের সহজ শর্তে মুক্তি দিয়েছেন, এটি হওয়ায় শিশুদের ভবিষ্যতে জীবনমান উন্নয়ন করতে পারবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

অন্যান্য সংবাদ
Theme Created By ThemesDealer.Com
x
error: কপি করা নিষেধ !
x
error: কপি করা নিষেধ !