স্বামী-স্ত্রীর পাল্টা-পাল্টি মামলা !
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ আগস্ট ২০২০, ৭:২৭ অপরাহ্ণছাতকে সন্তান রেখে স্ত্রীকে মারধোর করে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে স্বামী। স্ত্রীকে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দিয়েও সে সংঘবদ্ধ হয়ে শশুর বাড়িতে গিয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। এসময় বাঁধা দিতে এসে নারীসহ ৪ ব্যক্তি আহত হয়েছে। গুরুতর আহত তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
রোববার ছাতক থানায় এ ঘটনায় স্বামী সহ ১১জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্ত্রী নাইমা।
জানা যায়, ক’বছর আগে ছাতক উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের বারগোপি (কল্যাণপুর) গ্রামের জহুর আলীর কন্যা নাইমা বেগমের আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হয় একই গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে আবদুল কাহারের সাথে।
তাদের রয়েছে আলিয়া বেগম নামের সাড়ে ৩ বছরের এক কন্যা সন্তান। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে স্বামী যৌতুকের জন্য স্ত্রী নাইমাকে অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্বামীর যৌতুকের দাবী মিঠাতে পিতার কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা এনে দিয়েছে স্ত্রী। কিছুদিন পর পিতার বাড়ি থেকে আরও আড়াই লক্ষ টাকা এনে দেয়ার জন্য স্ত্রীকে চাঁপ দিলে সে অপারগতা প্রকাশ করে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী গত ২৮ আগষ্ট সন্ধ্যায় স্ত্রীকে মারধোর করে শিশু কন্যা আলিয়াকে রেখে পাঠিয়ে দেয় পিত্রালয়ে। পর দিন (২৯ আগষ্ট) সকালে সহযোগিদের নিয়ে শশুর বাড়িতে গিয়ে হামলা চালিয়ে ঘর ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে জামাতা আব্দুল কাহার।
এসময় বাঁধা দিতে এসে নারীসহ ৪ব্যক্তি আহত হয়। গুরুতর আহত ছাইদ মিয়া (১৭), আলিমা বেগম (২২) ও সাকিব মিয়া (২২) কে কৈতক হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এছাড়া আহত ছাদিক মিয়া (৩০)কে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় স্ত্রী নাইমা বেগম বাদী হয়ে রোববার স্বামী আবদুল কাহারসহ ১১জনের নাম উল্লেখ করে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এদিকে হামলা-মারধোরের ঘটনায় স্ত্রী নাইমা বেগম, শশুর জহুর আলী, সম্বন্ধিক ছাদিক মিয়াসহ ৬জনের বিরুদ্ধে রোববার ছাতক থানায় পাল্টা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের বারগোপি (কল্যাণপুর) গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে আবদুল কাহার। এ ব্যাপারে আবদুল কাহার জানান, বিয়ের পর থেকে তার স্ত্রী নাইমা তাকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছিল।
২৮ আগষ্ট সকালে পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এসব বিষয় স্ত্রী তার পিতা ও ভাইদের কাছে অতি উৎসাহি হয়ে বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দিন রাত সাড়ে ১০ টায় শশুর জহুর আলীর নেতৃত্বে দেশিও অস্ত্র নিয়ে তার বসত ঘরে এসে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে প্রাণে মারার জন্য হামলা চালিয়ে আহত করে।
তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে আহত হয়েছেন আবদুল হামিদ ও তার স্ত্রী ফেরদৌস বেগম। হামলাকারীরা একটি মোবাইল সেট, নগদ টাকা ও আট আনা ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে গেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আবদুল কাহারকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও আবদুল হামিদকে কৈতক হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
জাহিদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই পলাশ চন্দ্র দাশ, উভয় পক্ষের অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন।