হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় স্কুল ছাত্রী কিশোরী দুই বোনকে ঘরে আটকে রেখে জোরপূর্বক গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গণধর্ষণের স্বীকার দুই বোন উপজেলার বার আউলিয়া গ্রামের জনৈক দুই সহোদয়ের মেয়ে ও সাটিয়াজুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার সাথে জড়িত দুই কিশোরকে গ্রেফতার করেছে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ।
শুক্রবার (৩০জুলাই) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুর ও হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ২জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হল- উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া গ্রামের নূরুল হকের পুত্র কোকন মিয়া (১৬) ও একই গ্রামের আব্দুল আউয়ালের পুত্র সুমন মিয়া (১৭)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া গ্রামের জনৈক দুই সহোদয়ের স্কুল পড়ুয়া দুই কিশোরী কন্যা পাশের বাড়ির কোকন মিয়ার দোকানে চিনি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। রাত বাড়ার সাথে সাথে পরিবারের লোকজন তাদের সন্ধান না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। অন্যদিকে পাশের বাড়ির দোকানের মালিক খোকন মিয়া তার সহযোগী সিএনজি চালক সুমন মিয়া নিয়ে ওই দুই কিশোরীকে কৌশলে ফুসলিয়ে দোকান ঘরের ভিতরের রুমে নিয়ে জোরপূর্বক রাতভর গণধর্ষণ করে। বিষয়টি ধর্ষিতা দুই কিশোরীর অভিভাবকরা জানতে পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সহ মুরুব্বিয়ানদের নিয়ে খোকন ও সুমন মিয়াকে চাপ দেন।
কিন্তু তারা কিশোরীর সন্ধান না দিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে এবং সুমন মিয়ার সিএনজি অটোরিকশা যোগে তাদের অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। তবে সামাজিক চাপের মুখে ভোর ৫টার দিকে ছেলে দুইজনের অভিভাবকের দেয়া প্রতিশ্রুতি মতে কিশোরীদের ছেড়ে দিলে তারা বাড়ি ফিরে।
পরে দুই কিশোরী রাতব্যাপী পাশবিক নির্যাতনের কথা অভিভাবকদের কাছে বর্ণনা করলে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ মুরুব্বিগণ বিষয়টি সালিশে মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভিকটিমদের অভিভাবকদের পক্ষ এতে সন্তুষ্ট না হয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে অভিযুক্ত দুই কিশোরের নাম উলেখসহ আরো ৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বাহুবল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে এলাকায় ঘটনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে সুমন মিয়া বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে এঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে বাহুবল সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার আবুল খয়ের ও বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত কিশোর খোকনকে বার আউলিয়া গ্রাম থেকে এবং সুমনকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে আটক করে পুলিশ।
বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, অভিযুক্ত দুই কিশোরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং দুই ভিকটিম কিশোরীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল প্রেরণ করা হয়েছে।