সিলেটে কমেছে কোরবানি

জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুলাই ২০২২, ৬:৪০ অপরাহ্ণ
বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেটে এবার ঈদে কমেছে পশু কোরবানি। সিলেট বিভাগের চার জেলায় এবার কোরবানি হয়েছে মোট ৩ লাখ ৯২ হাজার ৫৮৩টি গবাদিপশু। আর গত বছর এই সংখ্যা ছিলো ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৪১ টি্। ফলে এবার প্রায় এক লাখ পশু কম কোরবানি হয়েছে।
তবে দেশে পশু কোরবানি বেড়েছে ১০ শতাংশের মতো। সরকারি হিসাবে এবার সারা দেশে ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি পশু কোরবানি হয়েছে। আগের বছর সংখ্যাটি ছিল ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি। এই হিসাবে সংখ্যাটি বেড়েছে ৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫২১ বেশি।
ঈদের পরদিন সোমবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইফতেখার জানান, দেশের সবগুলো হাট এবং অনলাইনে এই পরিমাণ পশু বিক্রি হয়েছে। এই হিসাবে অনলাইনে যেসব পশু বিক্রি হয়েছে, সেগুলোও ধরা আছে।
তবে হাটে না নিয়ে খামারির বাড়ি থেকে বা সড়ক থেকে যে পশু বিক্রি হয়েছে, সেগুলো এই হিসাবের বাইরে। সে হিসাবে প্রকৃত কোরবানি এর চেয়ে বেশি।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোরবানি দেয়া হয়েছে গরু ও মহিষ। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি ৪৬ লাখ ২৯ হাজার ৪৩৬টি। এর মধ্যে সিংহভাগই গরু নিশ্চিত হলেও কতগুলো মহিষ, সেই সংখ্যাটি আলাদাভাবে হিসাব করেনি সরকার।
অন্যদিকে ছাগল ও ভেড়া কোরবানি হয়েছে ৪২ লাখ ২০ হাজার ৮২০টি। এই হিসাবেও কতগুলো ভেড়া তা আলাদাভাবে চিহ্নিত হয়নি।
সবচেয়ে বেশি গরু ও মহিষ কোরবানি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। তবে সংখ্যার হিসাবে সবচেয়ে বেশি কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে। গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য পশু মিলিয়ে ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় কোরবানি হয়েছে সংখ্যাটি প্রায় ২৫ লাখ। ১১ জেলার চট্টগ্রাম বিভাগে কোরবানির সংখ্যাটাও ২১ লাখের কিছু বেশি।
বিভাগওয়ারি সবচেয়ে কম পশু কোরবানি দেয়া হয়েছে চার জেলার ময়মনসিংহ বিভাগে। বন্যাকবলিত সিলেটের নাম রয়েছে নিচের দিক থেকে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে।
দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে ছাগল-ভেড়ার চেয়ে গরু-মহিষ কোরবানিতে আগ্রহ বেশি।
এর মধ্যে ছাগল-ভেড়ার তুলনায় সবচেয়ে বেশি গরু-মহিষ জবাই হয়েছে রাজশাহী বিভাগে।
এই পশুর মধ্যে প্রায় শতভাগই দেশেই লালন-পালন করা হয়েছে। এক দশক আগে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হতে থাকলে দেশে ব্যাপক হারে বাণিজ্যিক খামার গড়ে ওঠে। এখন দেশের চাহিদা পূরণে প্রতিবেশী দেশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে না।
নিজস্ব চাহিদা পূরণের সক্ষমতা গড়ে উঠলেও পশুর দাম বেড়ে গেছে অনেকটাই। ভারত থেকে যখন গরু আসত, তখন আড়াই শ থেকে ৩০০ টাকায় গরুর মাংস পাওয়া গেলেও এখন দামটি ৭০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।
কোন বিভাগে কত কোরবানি
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৭৬৮টি গবাদিপশু কোরবানি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ লাখ ৬৭ হাজার ৮১০টি গরু-মহিষ, ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৭১১টি ছাগল-ভেড়া। উট, দুম্বাসহ নানা ধরনের প্রাণী আছে ২৪৭টি।
চট্টগ্রাম বিভাগে কোরবানি দেয়া হয়েছে ২১ লাখ ২৮ হাজার ৪৫৯টি গবাদিপশু। এর মধ্যে ১৩ লাখ ১৩ হাজার ৬৭৮টিই গরু-মহিষ। অন্যদিকে ছাগল-ভেড়া জবাই হয়েছে ৮ লাখ ১৪ হাজার ৬৮৫টি। উট, দুম্বা, গয়ালসহ অন্যান্য প্রাণী আছে ৯৬টি।
রাজশাহী বিভাগে কোরবানি হয়েছে ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ১২৮টি গবাদিপশু। এর মধ্যে ৭ লাখ ৯ হাজার ২৪৩টি গরু-মহিষ আর ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৮৫টি ছাগল-ভেড়া।
রংপুর বিভাগে কোরবানি হয়েছে মোট ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৯৬টি। এর মধ্যে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৯৩টি গরু-মহিষ আর ৬ লাখ ৭ হাজার ৮০৩টি ছাগল-ভেড়া।
খুলনা বিভাগে কোরবানি হয়েছে ৯ লাখ ২৬ হাজার ২০৯টি গবাদিপশু। এর মধ্যে গরু-মহিষের সংখ্যা ২ লাখ ৫৮ হাজার ২৬৪টি। ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৬ লাখ ৬৭ হাজার ৯৩০টি।
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় কোরবানি হয়েছে ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৯৩৭টি গবাদিপশু। এর মধ্যে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৬১৪টি গরু-মহিষ। ছাগল ও ভেড়া আছে ২ লাখ ৩১ হাজার ৩২৩টি।
সিলেট বিভাগের চার জেলায় কোরবানি হয়েছে মোট ৩ লাখ ৯২ হাজার ৫৮৩টি গবাদিপশু। এর মধ্যে ২ লাখ ১ হাজার ১৮৬টি গরু-মহিষ আর ১ লাখ ৯১ হাজার ৩৯৭টি ছাগল-ভেড়া।
ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় কোরবানি হয়েছে মোট ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৭৮৩টি গবাদিপশু। এর মধ্যে গরু-মহিষের সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৪৮টি। ছাগল, ভেড়া ছিল ১ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৬টি। অন্যান্য প্রাণী জবাই হয়েছে ৪৯টি।

