সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভিড়
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ আগস্ট ২০২০, ১:২৫ অপরাহ্ণকরোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব স্থানে পর্যটকদের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই ঈদুল আযহার ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভিড় করেছেন অসংখ্য পর্যটক।
সোমবার (৩ আগস্ট) সিলেটের বিভিন্ন চা বাগান, গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি ও জাফলংয়ে গিয়ে দেখা গেছে পর্যটকদের ভিড়। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই তারা জড়ো হয়েছেন এসব স্থানে। বেশিরভাগ পর্যটকদের মুখেই নেই মাস্ক।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে জড়ো হওয়া পর্যটকদের সকলেই সিলেটের বাসিন্দা। বাইরের জেলা থেকে এবার কেউ আসেননি।
করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষিতে গত ১৮ মার্চ থেকে পর্যায়ক্রমে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবত রয়েছে।
ঈদের আগে গত ৩০ জুলাই সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেছিলেন, গত ঈদের মতোই এবারের ঈদে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে। এই ঈদেও সিলেটের কোনো পর্যটন স্পট খুলবে না। জেলা কোভিড-১৯ বিষয়ক কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পর্যটন স্পট খোলার কোনো নির্দেশনা নেই।
গত ১ আগস্ট সারাদেশে ঈদুল আযহা পালিত হয়েছে। রোববার (২ আগস্ট) পর্যন্ত সরকারি ছুটি ছিলো। সরকারি ছুটি শেষ হলেও এখন ছুটির আমেজ বিরাজ করছে। সোমবার (৩ আগস্ট) সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্যবারের তুলনায় এবার পর্যটক সমাগম অনেকটা কম। তবু অনেকেই এসব স্থানে বেড়াতে এসেছেন। পরিবার নিয়েও এসেছেন কেউ কেউ। রোববারও (২ আগস্ট) পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে এভাবে মানুষের ভিড় ছিলো বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকায় বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন কলেজ ছাত্র সৈকত ইসলাম। তাদের কারো মুখেই মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই ছবি তুলছেন-গল্প করছেন তারা। সৈকত বলেন, ঘরে থাকতে থাকতে সবকিছু একঘেয়ে হয়ে উঠেছে। তাছাড়া আজকে প্রচুর গরম। তাই এখানে একটু বাতাস খেতে এসেছি। মাস্ক মুখে না থাকলেও পকেটে আছে বলে জানান তিনি।
সোমবার পরিবার নিয়ে বিছনাকান্দিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন সিলেটের শিবগঞ্জ এলাকার নাহিদ আহমদ। তিনি বলেন, আমরা পরিবারের লোকজন নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই একটু বেড়াতে এসেছি। তবে এখানে এতো ভিড় হবে বুঝিনি।
সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, সাদাপাথর, রাতারগুল, লালাখাল পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় স্থান। এখানকার চা বাগান দেখতেও আসেন অনেক পর্যটক। সারাবছরই সিলেটে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। তবে ঈদ মৌসুমে তা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তবে করোনা সংক্রমণের কারণে গত মার্চ থেকে প্রায় পর্যটকশূন্য অবস্থায় রয়েছে সিলেট। এতে লোকসান গুণতে হচ্ছে পর্যটনখাতের উদ্যোক্তাদের। এই ঈদেও বাইরের পর্যটকরা আসেননি বলে জানিয়েছেন তারা।
সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সভাপতি সুমাত নূরী চৌধুরী বলেন, গত ঈদের মতো এবারের ঈদেও ফাঁকা অবস্থায় আছে সিলেটের হোটেল-রিসোর্টগুলো। বাইরের পর্যটকরা একেবারেই আসেননি।
স্থানীয় লোকজনই পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ঘুরছেন বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।
কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য বলেন, পর্যটক যাতায়াতের ক্ষেত্রে আমরা বিশেষ নজরদারি রেখেছি। এ জন্য স্থানীয় লোকজন ছাড়া বাইরের মানুষজনের যাতায়াত নেই।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুস সাকিব বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনসমাগম এড়াতে গত ৩০ মার্চ জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ওই নির্দেশনার কারণে ঈদুল ফিতরে পুরোপুরি পর্যটকশূন্য ছিল জাফলং। এবারের ঈদে পরিস্থিতির কিছু পরিবর্তন হওয়ায় আমরা পর্যটনকেন্দ্রে যাতায়াত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ না করে নিরুৎসাহিত করছি। এই শিথিল অবস্থায় কিছু মানুষের ভিড় হচ্ছে। তবে বাইরের মানুষজন এখনো শূন্য।