সঙ্কটে শায়েস্তাগঞ্জের ইমাম-মুয়াজ্জিনরা
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ মে ২০২০, ৮:০৩ পূর্বাহ্ণনিজস্ব প্রতিবেদক, জাগো নিউজ :
প্রতিবছর রমজান মাসে মুসল্লিদের আগমনে মসজিদগুলো কানায় কানায় পূর্ণ থাকে। খতমে তারাবি পড়ানোর জন্য আগে থেকেই হাফেজ নিয়োগ করতে হয়। প্রতিটি মসজিদে ধর্মীয় রীতি অনুসরণের পাশাপাশি একটি সামাজিক সৌহার্দ্যের পরিবেশও সৃষ্টি হয়। সেই সঙ্গে ইমাম-মুয়াজ্জিন-হাফেজদের জন্য বিশেষ হাদিয়াও বরাদ্দ থাকে। আর স্থানীয় মুসল্লিরাই এই অর্থের যোগান দিতেন।
তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার মসজিদে যাতায়াত সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। তারাবির নামাজে কমে গেছে মুসল্লির উপস্থিতি। তাই ব্যতিক্রমী সংকটে পড়েছেন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ইমাম, মুয়াজ্জিন ও হাফেজরা।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রমজান মাসে স্থানীয় মুসল্লিরা মসজিদ কমিটির মাধ্যমে দুই হাত ভরে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানী দিয়ে থাকেন। অনেক মসজিদে তারাবির নামাজে হাফেজরা এক মাস ইমামতি করেন। এ সময় তারা নামাজে কোরআনের ৩০ পারা পাঠ করেন। একে বলা হয় খতমে কোরআন। হাফেজরা তাই তারাবিকে তাদের কোরআন চর্চার বিশেষ মাস হিসেবে দেখেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেক মসজিদ থেকে তাদের সম্মানিও দেওয়া হয়। সেই অর্থ দিয়েই তারা পরিবার নিয়ে ঈদ উৎসব করেন, সংসারের খরচও মেটান। কিন্তু এ বছর করোনা মোকাবিলায় সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা।
উপজেলার পূর্ব নোয়াগাঁও জামে মসজিদের ইমাম সৈয়দ মুজাক্কির হোসেন বলেন, আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামাত কেন্দ্রীয় কমিটির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি আমলে নিয়ে সরকারের নির্দেশে ইতোমধ্যে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের তালিকা করা হয়েছে। কিন্তু এখনও আমরা কোনও ধরনের সরকারি প্রণোদনা পাইনি।
জগন্নাথপুর জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিতাব আলী শাহিন বলেন, আমাদের মাদরাসার ছাত্ররা ছুটিতে রয়েছে। এবার যেহেতু খতমে তারাবি হয়নি, তাই মসজিদে মুসল্লির সংখ্যাও কম। আমরা ব্যক্তিগতভাবে ইমাম-মুয়াজ্জিনকে সহায়তা করার উদ্যোগ নিয়েছি।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী আক্তার বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার বয়স মাত্র আড়াই বছর। এখনো অনেক দপ্তরেরই কার্যক্রম শুরু হয়নি। তাই শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস এখনো স্থাপন হয়নি। তবে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের প্রণোদনা বিষয়টির সম্পর্কে এখনো কোনও নির্দেশনা পাইনি।
হবিগঞ্জ জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকতা নজরুল ইসলাম বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি মসজিদের ইমাম ও মসজিদ কমিটির সভাপতির নাম ও মোবাইল নাম্বার ১৭ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু মুয়াজ্জিনদের তালিকা পাঠানো হয়নি। আশা করছি ঈদের আগে প্রণোদনা পেয়ে যাবেন ইমামরা।