শ্রীমঙ্গলে খাদ্য সংকটে বেওয়ারিশ কুকুর
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ আগস্ট ২০২০, ৭:১৬ অপরাহ্ণকরোনায় খাদ্য সংকটে পড়েছে শ্রীমঙ্গলের বেওয়ারিশ কুকুররা। এতে করে উন্মুক্ত সড়কে খাবারের সন্ধ্যনে ঘুরে বেড়ানো কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভয় আর আতঙ্কে রয়েছে পৌরবাসী।
করোনা প্রাদুর্ভাবে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান পালনে বিধি নিষেধের কারণে কমিউনিটি সেন্টার, বাসা বাড়ি, হোটেল রেস্টুরেন্টে পার্টি, বিয়ে সাদী ও সামাজিক আয়োজন অনেকটা কমে গেছে। এসব অনুষ্ঠানের খাবারের উচ্ছিষ্ট মূলত বেওয়ারিশ কুকুররা খেয়ে থাকে।
গত সোমবার রাতে শহরের ভানুগাছ রোড, মৌলভীবাজার রোড, স্টেশন রোড, হবিগঞ্জ রোড ও গুহ রোড ঘুরে দেখা গেছে, উচ্ছিষ্ট খাবারের অভাবে কুকুরা দলবেঁধে শহরের এসব সড়কের অলি গলিতে ঘুরে বেড়াতে। কিছু কুকুরকে ডাস্টবিনের ধারে কামড়াঁ কামড়ি করে খাবার সংগ্রহ করতে। এসব কুকুরের ভয়ে পথচারীরা চলতে সর্তকতা অবলম্বন করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে রাতের পথচারীদের মাঝে কুকুর আতঙ্ক বিরাজ করছে । শহরের পুরান বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী কামাল পাশা বলেন, রাতে এখন শহরে চলতে ভয় করে। তিনি বলেন, এখন কুকুরের প্রজনন সময় হওয়ায় অনেক কুকুরেরা পথচারী দেখলে আক্রমনাত¦ক হয়ে উঠে। স্থানীয় পৌরসভা র্কর্তপক্ষ কুকুর নিয়ন্ত্রনে ভ্যাকসিন প্রয়োগের কর্মসূচী নেয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা চোখে পড়েনি।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কুকুরের কামড়ে আক্রান্তরা অস্বাভাবিক আচরণ করে থাকে। ক্ষত স্থানে ব্যথা হয়, জ্বালাপোড়া করা, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ঢোক গিলতে গলায় ব্যথা লাগে। জ্বর ও খিঁচুনিও হতে পারে। মেজাজ খিটখিটে, পানি খেতে না পারা। বাতাস ও আলো সহ্য করতে না পারা। পুরো শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে- এমন উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মহসিন মিয়া মধু ‘জাগো নিউজ’-কে বলেন, বেওয়ারিশ কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে এসব কুকুর নিয়ন্ত্রনে কর্মসূচী নেয়ার কথা।
প্রাণীসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ রুহুল আমিন ‘জাগো নিউজ’-কে বলেন, প্রতি বছর বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রনে যে ভ্যাকসিন দেয়ার কথা করোনা পরিস্থিতির কারণে ২য় রাইন্ড ভ্যাকসিন প্রয়োগে দেরি হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী ‘জাগো নিউজ’-কে জানান, কুকুরের কামড়ে সংক্রমণ, টিটেনাস রোগের আশঙ্কা থাকে। র্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর, বিড়াল, শিয়াল, বেজি, বানর বা চিকার মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায়। আমাদের দেশে মূলত কুকুরের কামড়ে বা আঁচড়ে (রক্ত বের না হলেও) জলাতঙ্ক রোগ হয়। সাধারণত ১ সপ্তাহ থেকে ৩ মাসের মধ্যে এর লক্ষণ ফুঁটে উঠে। শরীরের নিচের অংশে কামড় বা আঁচড় দিলে এবং এর মাত্রা কম হলে ৭ বছরের মধ্যে যেকোনো সময় জলাতঙ্কে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তিনি বলেন, এ রোগে আক্রান্ত মানুষের বাচার সম্ভবনা কম থাকে।
তিনি বলেন, বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রনে প্রাণী সম্পদ বিভাগের সাথে সমন্বয় করে খুব শিঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।