মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজ আদায়
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ জুলাই ২০২০, ২:১৯ অপরাহ্ণমৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদের সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে শুক্রবার (৩১ জুলাই) দেশের বিভিন্ন স্থানে পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। মৌলভীবাজার সার্কিট হাউস এলাকায় এদিন সকাল সাড়ে ৬টায় অনুষ্ঠিত ঈদ জামাতের ঈমামতি করেন আব্দুল মাওফিক চৌধুরী। এতে অর্ধ শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন। নামাজ শেষে দেশ ও জাতীর কল্যাণে মোনাজাত এবং কোরবানি দেয়া হয়।
দীর্ঘ চৌদ্দ বছর ধরে মৌলভীবাজার সার্কিট হাউস এলাকায় সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে জানা যায়।
এছাড়া দিনাজপুরের জেলা সদর, চিরিরবন্দর বিরল, কাহারোল, বিরামপুর এবং খানসামা উপজেলা এলাকায় পৃথক জামাতে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন প্রায় দুই হাজারের অধিক মানুষ। পরে পশু কোরবানি দেন তারা।
সকাল সাড়ে ৭টায় দিনাজপুরের শহরের চুরিপট্টি এলাকায় একটি (পার্টি সেন্টার) কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত নামাজে অংশ নেন প্রায় দুইশত পরিবার। এতে ইমামতি করেন ঢাকার মাদ্রাসাতুল হাদিসের ছাত্র সাইফুল ইসলাম।
এছাড়াও প্রায় একই সময়ে চিরিরবন্দরের সাইতাড়া রাবারড্যাম, বিরলের বালন্দর, কাহারোলের জয়নন্দ বিরামপুরের দুই স্থান আয়রা মাদ্রাসা মাঠ ও খয়েরবাড়ী মির্জাপুর দাখিল মাঠ, খানসামার পাকেরহাটসহ বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন তারা।
চাঁদপুরের ৫০টি গ্রামে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে জেলার ৪ উপজেলার ৫০টি গ্রামের কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, শাহরাস্তি ও মতলব সহ উত্তরের এই ৫০টি গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলিম ধর্মীয় এই উৎসবে যোগ দেন। সকালে নিজ নিজ গ্রামে ঈদের নামাজ আদায় করেন তারা।
জেলার হাজীগঞ্জের সাদ্রা সিনিয়র মাদরাসা, বলাখাল, সমেশপুর, ফরিদগঞ্জের বদরপুর, টোরামুন্সিরহাট, উভারামপুর, মতলব উত্তর ও শাহরাস্তি উপজেলার ৫০টি গ্রামে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফের পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) ১৯৩২ সালে চন্দ্র মাস হিসেব করে সৌদি আরব এবং মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে এই অঞ্চলে দুটি ঈদ এবং রোজা প্রচলন করেন। তারপর থেকে প্রয়াত এই কামেল ব্যক্তির অনুসারীরা সেই ধারা অব্যাহত রেখে চলেছেন।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ৭ গ্রামে ঈদুল আজহার জামাত ও পশু কোরবানি হয়েছে। শুক্রবার উপজেলার রূপাপাত ও শেখর ইউনিয়নের শেখর, কাটাগড়, গঙ্গানন্দপুর, রাখালতলি, মাইটকুমরা, সহস্রাইল, দুর্গাপুর গ্রামের প্রায় আড়াইশ পরিবারের শতাধিক মানুষ ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।
আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাহিদুল হক জানান, আমাদের পূর্বপুরষ থেকে আমরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা মির্জাখিল পীরের তরিকাপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার হযরত ইয়াছিন আলী (রহ.) পীরের অনুসারী। আমরা যারা মির্জাখিল পীরের অনুসারী তারা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা রাখা, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করে থাকি।
ঈদ উপলক্ষে এসব গ্রামের প্রতিটি ঈদের জামাত ঘিরে ছোটখাটো গ্রামীণ মেলা বসেছে।
পটুয়াখালীর ৩৭ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবের সাথে সঙ্গতি রেখে পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করছে। সকাল সাড়ে ৮টায় সদর উপজেলার বদরপুর দরবার শরীফে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ শেষে তারা পশু কোরবানি দেন।
জেলার ৩৭ গ্রামের মধ্যে রয়েছে গলাচিপার সেনের হাওলা, পশুরী বুনিয়া, নিজ হাওলা, কানকুনি পারা, মৌডুবি, বাউফলের মদনপুরা, রাজনগর, বগা, ধাউরাভাঙ্গা, সুরদি, চন্দ্রপাড়া, দ্বিপাশা, শাপলা খালী, কনকদিয়া, আমিরাবাদ, কলাপাড়ার নিশানবাড়িয়া, ইটবাড়ীয়া, শহরের নাঈয়া পট্টি, টিয়াখালী, তেগাছিয়া, দক্ষিন দেবপুর। স্থানীয়ভাবে ওই ৩৭ গ্রামবাসী চট্টগ্রামের এলাহাবাদ সুফিয়া ও বদরপুর দরবার শরীফ এবং চানটুপির অনুসারী হিসাবে পরিচিত।
বরিশাল নগরীর ২৩ নং ওয়ার্ডের তাজকাঠি হাজিবাড়ি এলাকার মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে পশু কোরবানি দেন তারা। বরিশাল নগরীর ৩টি এলাকাসহ জেলার ৪০ গ্রামে ঈদ পালন করা হচ্ছে আজ। এরা চট্টগ্রামের চন্দনাইশ কাঞ্চন নগর পশ্চিম এলাহাবাদ জাহাগিরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী। বরিশাল বিভাগে এদের ৭৫টি মসজিদ রয়েছে।