মানবসেবায় নিরবে নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন লাখাইয়ের বাবলু মিয়া
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ অক্টোবর ২০২০, ৭:১৮ অপরাহ্ণমানুষ হিসেবে আরেকজন মানুষকে সাহায্য করা আমাদের মানবিক দায়িত্ব। কিন্তু বর্তমানে দায়িত্বের দায়বদ্ধতা এড়ানোই যেন দুনিয়াবী নিয়মের এক চর্চায় পর্যবসিত হচ্ছে। সেখানে সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত, কেউ কারো খবর রাখে না। তবে দুষ্প্রাপ্য হলে ও কিছু মানুষ আছে যারা সকল দায়িত্বের উর্ধ্বে গিয়ে মানবিকতাকে গ্রহন করেছেন স্বীয় দায়িত্ব হিসেবে। ক্ষুদ্র দৃষ্টিকোণে আমরা তাদেরকে হয়তো নির্বোধ, উন্মাদ বলি বা বিভিন্ন বিশেষনে বিশেষায়িত করি । সমাজ তাদের কি বিশেষনে আখ্যায়িত করলো সেদিকে ভ্রূক্ষেপ না করে তারা নিজেকে সর্বদা নিয়োজিত রাখেন মানবসেবায়। প্রকৃতপক্ষে তারাই মানুষ এবং মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তারা নিরবে নিভৃতে করে যাচ্ছেন মানবসেবা নামক মহৎ কাজটি।
এরকম নিভৃতচারী ও প্রচার বিমুখ মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্হাপনকারী হলেন লাখাই উপজেলার লাখাই ইউনিয়নের রুহিতনসীর বাসিন্দা বাবলু মিয়া। পেশায় একজন বর্গাচাষী । চাষের জমির সামান্য আয়ে চলে তার সংসার। তবে দারিদ্রতার কষাঘাত তার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেললে ও মুখের হাসিটুকু কেড়ে নিতে পারেনি । সেই হাসির রেখা আরো দীর্ঘায়িত হয় যদি সে কোনো অসহায় মানুষকে সাহায্য করতে পারে। দরিদ্র, অসহায় ও প্রতিবন্ধী মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য নিজের ঘরের চাল, ডাল বিলিয়ে দেন তিনি। ফলে যা হবার তা ঘটে অর্থাৎ নিজেকে থাকতে হয় উপোস।
তারপর ও তারমুখে লেগে থাকে আনন্দের হাসি। নিজের দৈন্যদশা থেকে মুক্তির চিন্তা নেই। কিন্তু কিভাবে অসহায় মানুষদের টাকা, খাবার দিয়ে সাহায্য করতে হবে সেই চিন্তায় প্রতিনিয়ত ব্যস্ত। মানুষকে সাহায্য করা তার একটা নেশায় পরিনত হয়েছে। তাই কোনো অসহায় কাছে আসলেই বা দেখলেই সাহায্যের হাত বাড়ান। এমনকি নিজের ঘরের খাট, ফ্যান, আসবাবপত্র বিক্রি করে অন্যকে সাহায্য করেছেন বলে জানান তার স্ত্রী ও প্রতিবেশীরা। তবে দরিদ্র অসহায় মানুষদের কাছে তিনি পূজনীয় ব্যক্তিত্ব। আঙ্গুরা বেগম নামক একজন প্রতিবন্ধী জানান, বাবলু ভাইয়ের সহায়তায় আমরা দুইবোন প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়েছি। তাছাড়া উনি আমাদের সারাবছর টাকা, খাবার দিয়ে সাহায্য করেন। সাখাওয়াত হোসেন নামে একজন কলেজ ছাত্র জানায়, বাবলু মিয়া অশিক্ষিত হলে ও শিক্ষা ও দরিদ্র মানুষের জন্য তিনি নিবেদিত প্রান। অনেক ছাত্রদের পড়ালেখার উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা দিয়েছেন এবং ছাত্রদের পড়ালেখার ব্যাপারে উৎসাহ দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক আব্দুস সালাম (ফুল মিয়া) জানান, বাবলু মিয়া অনেক দরিদ্র, অসহায় মানুষদের নিজ উদ্যোগে প্রতিনিয়ত সাহায্য- সহযোগিতা করছে। এমনকি যারা স্হানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হয়ে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাদের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদের মাধ্যমে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন। এককথায় দরিদ্র, অসহায় মানুষের বন্ধু হলো বাবলু মিয়া।