পর্যটক বেশে জাফলংয়ে ফটোগ্রাফার খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ২
![](https://jago.news/images/icon.png)
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুলাই ২০২০, ১:০৯ অপরাহ্ণ![](https://jago.news/wp-content/uploads/2020/07/321-scaled.jpg)
সিলেটের জাফলং পিকনিক স্পটের ফটোগ্রাফার সাদ্দাম হোসেন (৩০) নামের এক ট্যুরিস্ট গাইড খুনের ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- পিবিআই সদস্যরা।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান। সোমবার নারায়ণগঞ্জ থেকে তাদের আটক করা হয়।
তারা হলেন: জেলার রূপগঞ্জ থানার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের দীন ইসলামের ছেলে মো. হুমায়ুন (১৫) ও একই এলাকার মো. সানীর ছেলে মো. সজল।
পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার জানান, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সন্ধ্যায় জাফলং গ্রিনপার্ক এলাকা থেকে ১৫ জুলাই সাদ্দাম হোসেন (৩০) নামের এক ট্যুরিস্ট গাইডের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের মৃত হাসেম মিয়ার ছেলে। পেশায় ট্যুরিস্ট গাইডের পাশাপাশি ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করত সে।
এ হত্যাকাণ্ডের পর তার স্ত্রী বাদি হয়ে মামলা দায়ের করলে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পাশাপাশি পিবিআই এ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। কিন্তু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তেমন কোন ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। মামলার এজাহারে তিন মাস পূর্বের একটি ঘটনা নিয়ে পূর্বশত্রুতার বিষয়ে কিছু তথ্য উল্লেখ ছিল। এই বিষয়টিকে মূল ধরে তদন্তের কাজ চালিয়ে যায় পিবিআই।
একপর্যায়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায় মারা যাওয়ার দিন দুজন লোকের সাথে সাদ্দাম হোসেনকে দেখা যায়, কিন্তু তাদেরকে স্থানীয়রা চেনেন না। এসব তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ জুলাই থেকে এসআই সুদিপসহ একটি টিম পুরোদমে কাজ শুরু করেন। তদন্তের মাধ্যমে নানা তথ্য যাচাই বাছাই করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে পিবিআই এবং ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত এই দুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে সাদ্দাম হোসেনের ব্যবহৃত স্যামসাং জে-২ মোবাইল ও ক্যানন ৭৫০ ডিএসএলআর ক্যামেরা উদ্ধার করা হয় বলেও জানান পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার।
তিনি আরো বলেন, তারা মূলত পর্যটকের ছদ্মবেশে সিলেটে এসে এমন কাজ করেছে। গত ১৪ জুলাই তারা সিলেটে এসে টার্মিনাল এলাকার হোটেল ‘আল হক’ এ রাত্রিযাপন করে। হোটেলের রেজিস্ট্রারে সজল নিজের নাম উল্লেখ করলেও হুমায়ুন নিজের নাম সাগর হোসেন উল্লেখ করে। ১৫ জুলাই তারা জাফলংয়ে ঘুরতে যায় এবং সাদ্দাম হোসেনকে টার্গেট করে। ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে তারা সাদ্দাম হোসেনকে নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করে এবং তার সাথে থাকা মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ সুপার জানান, সজল পেশায় বাসের হেলপার এবং হুমায়ুন জুতার দোকানের সেলসম্যান হিসেবে কাজ করে।
উল্লেখ্য, প্রতিদিনের মতই ১৫ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ক্যামেরা নিয়ে পর্যটকদের ছবি তোলার জন্য পর্যটনকেন্দ্র সংগ্রাম বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশে সাদ্দাম বাড়ি থেকে বের হন। এরপর বিকেলবেলা জাফলং বন বিটের গ্রিনপার্ক এলাকায় স্থানীয় লোকজন তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানা খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাদ্দামের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ।
![](https://jago.news/wp-content/uploads/2024/02/WEB.png)