মতিউর রহমান মুন্না :: নবীগঞ্জে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে এবার ঈদুল ফিতরের নামাজ ঈদগাহে বা খোলা জায়গায় জামায়াত না করে বরং স্বাস্থ্যবিধি মেনে পৃথকভাবে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করার জন্য মুসল্লিদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার পাল। গত ২০ মে ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে হবিগঞ্জ জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও এমন সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।
‘জাগো.নিউজ‘কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন- করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক ঈদের নামাজ এর জামায়াত ঈদগাহের পরিবর্তে মসজিদে অনুষ্ঠিত হতে হবে। জনসমাগম রোধে সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টায় পৃথক পৃথক জামায়াত এর ব্যবস্থা করতে হবে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রতিটি ঈদগাহ কমিটি ও মসজিদ কমিটির সাথে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে জরুরি সভা করে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে বলা যেতে পারে। একই সঙ্গে ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলি না করারও অনুরোধ জানান তিনি।
এছাড়াও- ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করে সেখানে মসজিদের ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যাপারেও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়, ‘বর্তমানে সারা বিশ্বসহ আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিজনিত ওজরের কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামায়াত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে।’
পরিপত্রের নির্দেশনায় বলা হয়েছে,
এসব নির্দেশনা লংঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে পরিপত্রে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, করোনা ভাইরাস প্রার্দুভাবজনিত কারণে সারাদেশে বন্ধ ঘোষণা ও জনসমাগম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সম্প্রতি সরকার সার্বিক বিবেচনায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ ঘোষণার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। এ সময় দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ওলেমাগণও পবিত্র রমজানুল মোবারক মাসের গুরুত্ব বিবেচনা করে মসজিদে নামাজ আদায়ের শর্ত শিথিল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর দাবি পেশ করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ মে জোহরের ওয়াক্ত থেকে কিছু নির্দেশনা পালনের শর্তে মসজিদগুলো সুস্থ মুসল্লিদের উপস্থিতিতে জামায়াতে নামাজের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়।
ইতোমধ্যে মন্ত্রপরিষদ বিভাগ থেকে উন্মুক্ত স্থানে বড় পরিসরে ঈদের জামাত পরিহারের নির্দেশনা দিয়ে বর্তমানে বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুযায়ী ঈদের জামাত আয়োজন সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশাবলী বিশেষ সতর্কতামূলক বিষয়াদি হিসেবে অনুসরণ করে শর্ত সাপেক্ষে ১৪৪১ হিজরির পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের জামাত আদায়ের জন্য অনুরোধ করা হয়।#