বাহুবলের দিগম্বর বাহারে মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। দুই লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করতে গিয়ে তাদের হত্যা করেছেন প্রতিবেশী আমীর হোসেন।
শনিবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টায় সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ উল্ল্যা।
এর আগে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতে ১৬৪ ধারায় আমীর হোসেনের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন।
বাহুবল মডেল থানা পুলিশ শুক্রবার (১৯ মার্চ) আমীর হোসেনকে গ্রেফতার করে। তিনি সিলেটের শাহপরান থানার চৌকিদিঘী এলাকার আলমগীর মিয়ার ছেলে। আমীর হোসেনের স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মনির মিয়া নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শনিবার বিকেলে খাল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা, মোবাইল ফোন ও কিছু টাকা জব্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, বাহুবল উপজেলার দিগাম্বর বাজারের বাসিন্দা সঞ্জিত দাশ ও আমীর হোসেন প্রতিবেশী হওয়ায় উভয়ই পূর্ব পরিচিত।
কয়েকদিন আগে আমীর হোসেন সঞ্জিতের বাসায় এসে তিন হাজার টাকা ধার নেন এবং জানতে পারেন তাদের বাসায় আরও দুই লাখ টাকা এবং স্বর্ণালংকার রয়েছে।
গত ১৮ মার্চ সঞ্জিত তার স্ত্রী অঞ্জলী মালাকার (৩০) ও মেয়ে পূজা রাণী দাসকে (৮) বাসায় রেখে ব্যবসার জন্য কাচামাল কিনতে সুনামগঞ্জ যান। ওইদিন মা-মেয়ে বাসায় একা থাকার সুযোগে আমীর তার আরও দুইজন সহযোগীকে নিয়ে টাকা চুরি করতে আসেন এবং এক পর্যায়ে মা ও মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেন।
হত্যাকারীরা তাদের ব্যবহৃত ছুরি একটি খালে রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে আমীর হোসেন নিজেই তার হাত কেটে তৈরি করেন নতুন নাটক। বুঝাতে চান ডাকাতরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এরপর স্থানীয়রা তাকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরবর্তীতে আমীরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
উল্লেখ- গত বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকালে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুরি ইউনিয়নের দিগম্বর বাজারের একটি ৩ তলা বাসা থেকে মা-মেয়ের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহত অঞ্জলীর বাবা কার্তিক মালাকার বাদী হয়ে বাহুবল মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামি রেখে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।