জাফলংয়ে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক সমাগম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ৫:৩৪ অপরাহ্ণ
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠেছে পর্যটনের নগরী গর্ভধারিণী গোয়াইনঘাট উপজেলা। সবুজ পাহাড় আর নীল আকাশ,হিম শীতল স্বচ্ছ জল, নূড়ী পাথর দেখতে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের ঢল নেমেছে বিউটি কন্যা খ্যাত পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ে। প্রত্যাশিত ও রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের সমাগমে জাফলং পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।
জাফলং চাবাগান মোহাম্মদপুর থেকে শুরু করে জাফলং জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পর্যটকদের আনাগোনায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ জাফলং। আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব পরিবার-পরিজন শিশু-কিশোরদের আনন্দ উল্লাসে জাফলংয়ের সবুজ প্রকৃতিতে ফিরেছে প্রাণ।রমজানের কারণে দীর্ঘদিন পর্যটনকেন্দ্রগুলো ফাঁকা থাকলে ও এখন পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে গোয়াইনঘাটের সকল পর্যটনকেন্দ্রে। হোটেল-মোটেল আর রির্সোটগুলোতে পর্যটকদের সমাগম বেড়েছে।
বৃহষ্পতিবার ঈদের চতুর্থ দিন সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার জাফলং পর্যটনকেন্দ্র ছাড়াও বিছনাকান্দি,সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুল, স্বচ্ছ ও নীল পানির লালাখাল, পান্তুমাই ঝর্ণাসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোর ব্যাপক ব্যস্ততা। এসব স্পট এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত। হরেক রকম গাড়ির বহরে ও আবাল বৃদ্ধ বনিতা নানা শ্রেণী পেশার মানুষের আগমনে উপজেলার সব জায়গায় এখন মানুষের কোলাহল হই হুল্লোড়ে আকাশে বাতাসে আনন্দের হাওয়া বইছে।
নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়-পর্বত, গহীণ অরণ্য, জীব-বৈচিত্র্য, নদ-নদী, বৈচিত্রময় আদিবাসী সংস্কৃতি, সমৃদ্ধ ও গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি, ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ, অতিথিপরায়ণ মানুষ অর্থাৎ বিশ্বের যে কোন প্রান্তের যে কোন পর্যটককে আকৃষ্ট করার মত সকল উপকরণই সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বিদ্যমান।
বাংলাদেশে যে কয়েকটি পর্যটন এলাকা রয়েছে তার মধ্যে গোয়াইনঘাট অন্যতম। গোয়াইনঘাটে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বসবাস আর তার সঙ্গে প্রকৃতির রূপ যে কাউকে সহজেই মুগ্ধ করে।এদিকে বিনোদন কেন্দ্রের পাশাপাশি উপজেলার হোটেল-মোটেলগুলোতে বেড়েছে পর্যটকদের সমাগম। এতে লাভবান হওয়ায় প্রত্যাশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
আগত পর্যটকরা জানান, পর্যটনের উন্নয়নে সরকার ও প্রশাসনকে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে। তবে এ খাতে দ্রুত প্রসার ঘটবে। নতুন নতুন সুযোগ সুবিধা যুক্ত করে চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে নিতে হবে দেশের পর্যটন খাতকে। পর্যটনের বিকাশে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চাহিদা অনুযায়ী পর্যটনের প্রসার ঘটছে। নতুন নতুন স্থানে পর্যটনের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমুন্নত রেখে স্থানীয় জনসাধারণকে পর্যটন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করে টেকসই পর্যটন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।
এদিকে পর্যটকরা যেন নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারে সেজন্য সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করেছে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন। বেড়াতে আসা পর্যটকরা যাতে নিরাপত্তার সঙ্গে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমণ করতে পারে সেজন্য প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে। পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা ও নিয়মিত নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন।পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে টুরিস্ট পুলিশ, গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ,বিজিবি,বাংলাদেশ স্কাউট, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট ও আনসার সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে।
জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ঈদের ছুটিতে সকাল থেকেই পর্যটকে মুখরিত ছিল জাফলং। আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, পর্যটকরা বেড়াতে এসে যাতে কোনোভাবেই ভোগান্তিতে না পড়েন, সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে।

