চৌহাট্টায় বোমাতঙ্ক: জানা যায়নি নেপথ্যে কে ছিল !
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ আগস্ট ২০২০, ৪:২৪ অপরাহ্ণবোমাতঙ্ক ছড়ানোই কী উদ্দেশ্য ছিল? নাকি ভুলবশত গ্রাইন্ডিং মেশিনটা রাখা হয়েছিল মোটরসাইকেলে? কে বা কারা রেখেছিলেন? এমন সব প্রশ্নের উত্তর এখন খুঁজছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। তবে নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে বোমাতঙ্কের নেপথ্যে কে বা কারা আছে, তা জানা যায়নি পাঁচ দিনেও।
চৌহাট্টা পয়েন্টে অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকায় ঘটনার পেছনে জড়িত এক বা একাধিক ব্যক্তিকে সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে।
জানতে চাইলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার সিলেটভিউকে বলেন, ‘চৌহাট্টার ঘটনায় এখন তদন্তকাজ শেষ হয়নি। তদন্ত চলছে।’
তিনি বলেন, ‘(চৌহাট্টা পয়েন্টে লাগানো) সিসি ক্যামেরার ফুটেজ কালেকশন করা হচ্ছে, তদন্তের অংশ এটা।’
এর আগে গত ৬ আগস্ট সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেছিলেন, ‘সারা শহরেই আমাদের বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরা আছে। সামনের সময়ে আমরা তদন্ত করে এটা (কারা গ্রাইন্ডিং মেশিন রেখেছে) বের করতে পারি বলে মনে করছি।’
এদিকে, চৌহাট্টা পয়েন্টে যে মোটরসাইকেলে গ্রাইন্ডিং মেশিনকে ঘিরে তোলপাড় হয়, সেই মোটরসাইকেলের মালিক ছিলেন মহানগর পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডু। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ জানিয়েছেন, চয়ন নাইডু নিজের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় (চৌহাট্টা) অবস্থান করছিলেন। এজন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্তে তার অন্য গাফিলতি পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গেল ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডু তাঁর ঢাকা মেট্রো ১৪-৯২৭০ নম্বরের কালো রঙের পালসার মোটরসাইকেলটি চৌহাট্টা পয়েন্টে পুলিশ বক্সের পাশে রাখেন। তিনি পার্শ্বস্থ একটি দোকান থেকে ফিরে মোটরসাইকেলে লাল রঙের বোমাসদৃশ বস্তু দেখতে পান। বিষয়টি তিনি জানান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুলিশের ক্রাইসিস রেসপন্স টিম (সিআরটি) ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই মোটরসাইকেলে ঘিরে ফেলে। বন্ধ করে দেওয়া হয় চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক। মুহুর্তেই চৌহাট্টা পয়েন্টে মোটরসাইকেলে বোমা রাখা হয়েছে বলে গুঞ্জন ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে আসে র্যাব-৯ এর একটি টিমও।
সিলেট মহানগর পুলিশে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট না থাকায় খবর পাঠানো হয় ঢাকায়। পুলিশের সদর দপ্তর থেকে চৌহাট্টা পয়েন্টে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ও বোমা ধ্বংসকরণ টিম পাঠাতে অনুরোধ জানানো হয় সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরকে। সেনা সদর দপ্তর নির্দেশনা পাঠায় সিলেটস্থ ১৭ পদাতিক ডিভিশনকে।
এ ডিভিশনের বোমা বিশেষজ্ঞ লে. কর্ণেল রাহাত, লে. কর্ণেল খালেদ, ক্যাপ্টেন নূর, ক্যাপ্টেন গালিবসহ একটি টিম পরদিন (৬ আগস্ট) বেলা ২টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে। তাঁরা প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে বোসামদৃশ বস্তুটি উদ্ধার করে খুলে দেখেন। কিন্তু বস্তুটিতে বোমার কোনো চিহ্ন মেলেনি, সেটি ছিল স্রেফ একটি গ্রাইন্ডিং মেশিন (রড বা টাইলস কাটার যন্ত্র)।
ঘটনার পর সংশ্লিষ্টরা জানান, ডিজিটাল সিলেট সিটি প্রকল্পের আওতায় অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে সিলেট নগরীতে। এসব ক্যামেরায় ‘ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম’ রয়েছে। ফলে অপরাধীর চেহারা সহজে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। রাতেও এসব ক্যামেরা ‘নাইট ভিশন’ প্রযুক্তিতে সমানভাবে কাজ করতে সক্ষম। এ সিসি ক্যামেরা আছে চৌহাট্টা পয়েন্টেও। ফলে গ্রাইন্ডিং মেশিন কে বা কারা মোটরসাইকেলে রেখেছে, তা এসব সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ার কথা।
★ বোমা স্বদৃশ্য বস্তু উদ্ধার !
★ বোমা স্বদৃশ্য বস্তু : ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী : উদ্ধার কাজ শুরু
★ সিলেটে বোমা স্বদৃশ্য বস্তু : আসছে সেনাবাহিনী
★ সিলেটের চৌহাট্টায় বোমাসদৃশ্য বস্তু : ঘটনাস্থলে র্যাব-পুলিশ