Logo

গ্রীসে নবীগঞ্জের এক রেমিট্যান্স যোদ্ধার মৃত্যু, পরিবারের দাবী পরিকল্পিত হত্যা

মতিউর রহমান মুন্না
জাগো নিউজ : শুক্রবার, অক্টোবর ২৩, ২০২০

image_pdfimage_print

ইউরোপের দেশ গ্রীসে নবীগঞ্জের এক রেমিট্যান্স যোদ্ধার মৃত্যু নিয়ে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রীসের রাজধানী এথেন্সের একটি শহরে এ ঘটনাটি ঘঠেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে  গ্রীসের এথন্সে এথনিকি আমিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহতের নাম নাজমুল হোসেন। সে উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের লালাপুর গ্রামের মৃত আবুল কালামের পুত্র।

শুক্রবার সকালে তাদের বাড়িতে গেলে তার পরিবারের লোকজন অভিযোগের সুরে বলেন, টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই খবরে নিহতের বাড়িতে চলছে স্বজনদের শোকের মাতম। অশ্রুসিক্ত নয়নে অপেক্ষায় আছেন কখন ছেলের লাশ বাড়ি ফিরবে। লাশ দেশে ফেরাতে সরকারের সহযোগীতাও চান নিহতের পরিবার।

জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার লালাপুর গ্রামের গ্রামের আবুল কালামের পুত্র নাজমুল হোসেন পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে প্রায় ১৩ বছর পূর্বে বিদেশে পাড়ি জমান। ইরান, তুর্কি হয়ে প্রায় ৮ ধরে গ্রীসে বসবাস করছিলেন। একটি চায়নার কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেব কর্মরত ছিলেন। প্রায় ৮ মাস পূর্বে সেখানের নাগরিক হিসেবে বৈধতাও পেয়েছিলেন নাজমুল।

সম্প্রতি একই এলাকার মোস্তফাপুর গ্রামের মৃত আতাউর রহমানের পুত্র মফিজুর রহমান গ্রীসে যায়। সেখানে গিয়ে নাজমুলের সাথে থাকে। তারা একটি ভাড়াটিয়া বাসায় থাকতো।

নাজমুলের পরিবারের লোকজন জাগো.নিউজকে জানান, অনেক দিন ধরে কোন যোগাযোগ করছিল না নাজমুল। পরে তারা খবর পান গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে নাজমুলকে একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে স্থানীয় পুলিশ আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সে মারা যায়।

 নাজমুলের পরিবারের লোকজনের দাবী, নাজমুলকে রাতে ঘুমের মধ্যে মফিজুর রহমান কোনকিছু খাইয়ে অজ্ঞান করে মৃত ভেবে দেহ দূরে কোথায় ফেলে আসে। পরে থাকে সেখানের পুলিশ দেহ দেখতে পেয়ে হাসপাতাল ভর্তি করে। এমন তথ্য দিয়ে একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে গেছেন নাজমুল।

এ ব্যাপারে নিহতের মা নাজমা বেগম জাগো.নিউজকে জানান, ‘আমার ছেলের স্বপ্ন ছিল সে দেশে এসে বিয়ে করবে এ জন্য আমরা পাত্রীও খুঁজছিলাম। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণ হতে দিলো না ঘাতক। এসব বলেই বারবার মুর্চা যান তিনি।’

নিহতের ভাই এনামুল হোসেন জাগো.নিউজকে জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছিলেন নাজমুল। ভিডিওতে মফিজুলের কথাই বারবার বলেছেন।
এনামুল আরো বলেন, প্রবাস জীবনের উপার্জিত টাকা পয়সা জমা ছিল নাজমুলের কাছে। কিছু দিন আগে জানিয়েছিল তার কাছে ১৫/১৬ লক্ষ টাকা আছে। তার স্বপ্ন ছিল ভাইকে বিদেশ পাঠাবে, জায়গা কিনে ঘর বানাবে এবং এ বছরই দেশে এসে বিয়ে করবে। তার ওই টাকা আত্মসাতের উদ্দেশেই তাকে হত্যা করে টাকা নিয়ে পালিয়েছে মফিজুর। এমন অভিযোগ করেন নাজমুলের মা ও ভাই। লাশটি দ্রুত দেশে এনে শেষ দেখা দেখতে অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। নিহত নাজমুলের ৫ ভাই ও ১ বোনের মাঝে সে ছিল সবার বড়।

সেখানে অবস্থানরত কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জাগো.নিউজকে জানান, লাশটি এখনো হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এখনো আসেনি। রিপোর্ট আসার পর বুঝা যাবে কিভাবে নাজমুলের মৃত্যু হয়েছে।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিনের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি জাগো.নিউজকে বলেন, লাশ দেশে আনতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

অন্যান্য সংবাদ
Theme Created By ThemesDealer.Com
x
error: কপি করা নিষেধ !
x
error: কপি করা নিষেধ !