কিছুক্ষণের মধ্যে দু’দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা !
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ ডিসেম্বর ২০২০, ৪:২৭ অপরাহ্ণআসন্ন নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনকে নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা । ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে নবীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন । (আজ ১৮ ডিসেম্বর) কিচ্ছুক্ষণের মধ্যে কেন্দ্র থেকে ঘোষনা করা হতে পারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর নাম। অপরদিকে তফসিল ঘোষনার পর থেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন মেয়র প্রার্থীরা। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী ৭ জন। কেন্দ্রেও পাঠানো হয়েছে তাদের নাম।
অপরদিকে নবীগঞ্জ থানা ও পৌর বিএনপিতে দু‘ভাগে বিভক্তির খবর প্রচার হচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যমে। এমনকি মেয়র প্রার্থী মনোনীত করতে গিয়েও শুরু হয় গ্রুপিং। পৃথক সভায় দু‘গ্রুপ থেকে দুই প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হয়। কেন্দ্র থেকে আজ নির্ধারন হতে পারে ধানের শীষের প্রার্থীর নাম। এবার দেখার পালা কে হচ্ছেন আসন্ন নবীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে নৌকার মাঝি এবং কে হচ্ছেন ধানের শীষের কান্ডারী।
বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশ, গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে প্রার্থীদের আমলনামার খোঁজ খবর রাখছে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বোর্ড। ইতিমধ্যে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়েছে মাঠ পর্যায়ের জরিপ। অন্যদিকে মনোনয়ন পেতে ঢাকায় অবস্থান করছেন প্রায় সকল প্রার্থী। পুরোদমে চলছে লবিং-তদবির। ঢাকায় তদবিরে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৭ জনের মধ্যে রয়েছে- নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক ৩ বারের মেয়র ও নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ মিলু, নবীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজাহিদ আহমেদ, নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল, হবিগঞ্জ জেলা তাঁতীলীগের সহ-সভাপতি জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ আব্দুল মালিক ও লন্ডন প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ তাজুল ইসলাম।
প্রার্থী ৭ জন থাকলে একাধিক সূত্র বলছে- আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন- নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক ৩ বারের মেয়র নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ মিলু ও নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল। তবে দলীয় সভাপতির সিদ্ধান্তের পূর্বে মুখ খুলতে নারাজ কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী বলেন, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় ৭ জন প্রার্থীতা ঘোষনা করেন। পরে জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রে। কেন্দ্র থেকে চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ঘোষনা করা হবে।
বিএনপি: অপরদিকে নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির দুটি বলয়ের গ্রুপিং ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্বন্দ্ব। একাধিক সভা করেও সমাধান করা যাচ্ছেনা গ্রুপিং। আলাদা আলাদা সভায় পাল্টাপাল্টি দুটি বলয়ের পৃথক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এনিয়েও নানা আলোচনা চলছে শহরজুড়ে।
জানা যায়- নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে গত (৫ ডিসেম্বর) উপজেলা ও পৌর বিএনপির (একাংশ) এর সভায় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সরফরাজ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুর রহমান সেফুসহ পৌর ও উপজেলা বিএনপির একাংশের যৌথ সুপারিশের ভিত্তিতে পৌর বিএনপির সদস্য আনোয়ার হোসেন মিঠুকে একক প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়।
অপরদিকে গত (৭ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত নবীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপি (অপরাংশ) এর যৌথ সভায় নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির আহবায়ক ছালিক আহমেদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল আলীম ইয়াছিনী, ২য় যুগ্ম আহবায়ক জয়নাল আবেদীনসহ যৌথ স্বাক্ষরিত পত্রে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ছাবির আহমদ চৌধুরী নাম ঘোষণা করা হয়।
উভয় বলয়ের সভা শেষে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির কাছে বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ছাবির আহমদ চৌধুরী ও পৌর বিএনপির সদস্য আনোয়ার হোসেন মিঠু’র নাম প্রেরণ করা হয়। এর ফলে পাল্টাপাল্টি প্রার্থী ঘোষণা ও বিএনপির দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে।
গত ১৪ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি থেকে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবুল হাশেম বলেন- পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী নির্ধারণের নিয়ম অনুযায়ী নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির আহবায়ক, ১ম ও ২য় যুগ্ম আহবায়ক স্বাক্ষরিত পত্রে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করা হয়। সেই অনুযায়ী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আমি সুপারিশ পত্রে স্বাক্ষর করেছি। নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে ছাবির আহমদ চৌধুরীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জে.কে গউছ সুপারিশ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন কী না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- গউছ সাহেব স্বাক্ষর দেননি।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জি.কে গউছ বলেন- নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়ে আমি কিছু জানিনা, আমি মামলার কাজে ঢাকা আদালতে আছি। অপরদিকে একটি সূত্রে জানা গেছে, জেলা থেকে দায়িত্বশীল এক নেতার মাধ্যমে আনোয়ার হোসেন মিঠুর নাম এককভাবে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২০ ডিসেম্বর।
আজ ঘোষণা হতে পারে কে হচ্ছেন আসন্ন নবীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে নৌকার মাঝি এবং কে হচ্ছেন ধানের শীষের কান্ডারী ?