এ কেমন প্রতারণা !

জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ জুলাই ২০২০, ১:৩৮ অপরাহ্ণ
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে পাউন্ডের লোভে পড়ে এক লাখ ৬৩ হাজার টাকা হারিয়েছেন তানজিলা আক্তার হাসনা নামে এক গৃহবধূ । তিনি গাজীপুরের বাসিন্দা। তার স্বামী হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে চাকরি করার সুবাধে তিনি শায়েস্তাগঞ্জের অলিপুরে প্রায় ছয় বছর ধরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ শায়েস্তাগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জুলাই সকাল ১০টার দিকে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি বিমানবন্দরের কাস্টমস অফিসার পরিচয়ে ওই গৃহবধূর ফোনে কল দিয়ে বলেন- আপনার লন্ডন থেকে একটি পার্সেল আসছে। যাতে ৫০ হাজার পাউন্ড রয়েছে। এছাড়াও স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও ল্যাপটপ রয়েছে। আপনার মালগুলো হোম ডেলিভারিতে পাঠানো হবে।
ঠিক একটু পরেই এলিসন নামে একটি আইডি থেকে হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে আবার কল করে মানি এক্সপ্রেসে মাল পাঠানোর রসিদ ও পাউন্ডের ছবি পাঠানো হয়। তিনি ইংরেজিতে কথা বলছিলেন। এরপর হামিদুর রহমান শেখ নামে একজন কাস্টমসের লোক পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনার কার্গোতে নগদ পাউন্ড থাকায় বিমানবন্দরে স্ক্যান করে ধরা পড়েছে। সেজন্য এক লাখ ৬৩ হাজার টাকা জরিমানা পাঠাতে হবে। না হলে মালগুলো বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে।
তখন গৃহবধূ তানজিলা আক্তার হাসনাকে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর (৭০১-৭১০-০২১৬৩৫৮, মেসার্স হামিদুল এন্টারপ্রাইজ) দেয়া হয়। সেই অ্যাকাউন্টে তিনি ১৪ জুলাই ও ১৫ জুলাই তিনবারে মোট এক লাখ ৬৩ হাজার টাকা পাঠান। টাকা পাঠানোর পর কাস্টমসের লোক রসিদগুলোর ছবি হোয়াটস অ্যাপে নেন। তারপর বলেন- আপনি মালগুলো পেয়ে যাবেন।
ঘণ্টা খানেক পর হামিদুল আবার কল করে আরও সাড়ে তিন লাখ টাকা চান। তিনি বলেন, মালগুলো এয়ারপোর্টের এক নম্বর গেট পার হয়ে এবার দুই নম্বর গেটে আটক হয়েছে। এতে তানজিলা আক্তার হাসনার মনে সন্দেহ হলে তিনি ব্যাংকে যোগাযোগ করেন। বুঝতে পারেন তার সঙ্গে কোনো প্রতারণা করা হচ্ছে। তারপর তিনি ওই অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করে দেখেন হামিদুল এন্টারপ্রাইজের ঠিকানা ঢাকার কেরানীগঞ্জ। পরে তিনি হামিদুলকে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বললে হামিদুল বলেন- অ্যাপ্লিকেশন করা হয়েছে। আপনি মাল না নিলে টাকা ফেরত পেয়ে যাবেন। তারপর তার মোবাইল নম্বরে আর কল করা যাচ্ছে না। কোনো উপায় না পেয়ে গৃহবধূ তানজিলা আক্তার হাসনা শায়েস্তাগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আল মামুন ‘জাগো নিউজ’কে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মানুষের অসতর্কতার কারণে এ রকম ঘটনা ঘটছে। যা খুবই দুঃখজনক। এসব প্রতারক চক্রের হাত থেকে বাঁচার জন্য সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
