একাদশে ভর্তি কার্যক্রম পেছাচ্ছে
![](https://jago.news/images/icon.png)
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ জুন ২০২০, ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ![](https://jago.news/wp-content/uploads/2020/06/NSTB-scaled.jpg)
মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা থাকলেও তা আপাতত হচ্ছে না। অপর দিকে- একাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের দরপত্রের কাজ কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে। প্রকাশকরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে এবার বৈরী অবস্থা বিরাজ করছে।
বইয়ের কাঁচামাল কাগজ, কালি ও অন্যান্য সামগ্রী কেনাবেচা স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। বাঁধাই শ্রমিকেরও সংকট আছে। সবমিলিয়ে বইয়ের কাজ শেষ করতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার সময় কিছুটা বেশি লাগবে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, “জুন মাসে কলেজে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। সবকিছু বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
” মে মাসের মধ্যে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হলে আজ ৬ জুন থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছিল ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এই বোর্ড থেকে বেশ কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রীয়ভাবে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুন-আর-রশিদ বলেন, “সার্বক পরিস্থিতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া এখনই শুরু করা যাচ্ছে না।
সেপ্টেম্বরের দিকে যেহেতু (একাদশ শ্রেণির) ক্লাস শুরুর চিন্তা, তাই এখনই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করাটা রিস্ক হয়ে যায়। “কারণ অনলাইনে কলেজে ভর্তির আবেদন করা গেলেও শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের দোকানে যায়, কলেজে যায়। আমাদের যে অভিজ্ঞতা, প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ হাজার অভিভাবক বোর্ডেই আসেন। হয়ত আবেদন করতে পারেননি বা আবেদন করার সময় ভুল হয়েছে… সেটা ঠিক করতে দৌড়ে আমাদের কাছে আসেন। “এসব বিচার-বিশ্লেষণ করে বলছি সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হবে না। …তবে কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করতে আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে।” ভর্তি প্রক্রিয়াটা ‘আরেকটু পরে শুরু করা হবে’ জানিয়ে অধ্যাপক জিয়াউল বলেন, পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই মাসে আদৌ শুরু হবে কি না তা নিশ্চিত নয়। সবকিছু নির্ভর করবে করোনা পরিস্থিতির ওপর। “কলেজে ভর্তির সঙ্গে ১৭ থেকে ১৮ লাখ শিক্ষার্থী জড়িত। ভর্তির সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কিছু কাজ করতে হয়, ফলে এই সময় তারা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানতো এখনও বন্ধ, কাজেই অপেক্ষা করছি।” করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ১০ মে থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও মাধ্যমিকের ফল ঝুলে যাওয়ায় কলেজে ভর্তির নীতিমালাই জারি করা হয়নি। এবার ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন পাস করেছে।
অর্থাৎ তারাই এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করবে। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন। এদিকে সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্য ৩৬টির সঙ্গে এতদিন আইসিটি গ্রন্থটিও বেসরকারি প্রকাশকরা সরকারি কারিকুলামের আলোকে প্রণয়ন করে এনসিটিবি থেকে অনুমোদন নিতেন। কিন্তু আইসিটি গ্রন্থটি কারিকুলামের সঙ্গে ততটা মিল নেই। বিশেষ করে একেক প্রকাশক একেকভাবে গ্রন্থটি রচনা করেছেন। আবার অনেকে গ্রন্থটি দুর্বোধ্য করে রচনা করেছেন। এসব বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনেও আলোচনা হয়েছে। এরপরই গ্রন্থটি সরকারিভাবে রচনা ও বাজারজাতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য কাজের মতো একাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের দরপত্রের কাজ কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে। তবে আগামী সপ্তাহে এ নিয়ে কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আর যে গ্রন্থটি এবার সরকারিভাবে বাজারজাত করার কথা সেটি রচনার কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। ডিসি সম্মেলনে বইটির মান নিয়ে আপত্তি উঠায় সরকারিভাবে প্রণয়ন ও বাজারজাতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, এবার এখন পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়নি। এজন্য হয়তো কাজ শেষ করার ক্ষেত্রে আরও কিছুটা সময় পাওয়া যেতে পারে। এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, অন্যান্য বছর গড়ে একমাস সময় দেয়া হয় বই মুদ্রণ ও বাজারজাতের জন্য। সর্বশেষ গতবছর ১৩ দিন সময় দেয়া হয়েছিল।
সেই হিসাবে একাধিক প্রকাশককে কাজ দেয়া হলে দুই সপ্তাহে বই ছাপানো ও বাজারজাত করা সম্ভব বলে মনে করেন এনসিটিবির কর্মকর্তারা। তবে প্রকাশকরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে এবার বৈরী অবস্থা বিরাজ করছে। শ্রমিক সংকট আছে। বইয়ের কাঁচামাল কাগজ, কালি ও অন্যান্য সামগ্রী কেনাবেচা স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। বাঁধাই শ্রমিকেরও সংকট আছে। সবমিলিয়ে বইয়ের কাজ শেষ করতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার সময় কিছুটা বেশি লাগবে। তারা বলছেন, সেই হিসাব করেই এবার বইয়ের মুদ্রণ প্রক্রিয়া শুরু করা প্রয়োজন।
![](https://jago.news/wp-content/uploads/2024/02/WEB.png)