ইউপি চেয়ারম্যান মুকুলের বিরুদ্ধে এবার ভিজিডির চাল আত্মসাতের অভিযোগ
জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জুন ২০২০, ১২:২১ অপরাহ্ণবাংলাদেশ সরকারের একটি সর্ববৃহৎ সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির নাম ভিজিডি। দুঃস্থ ও অসহায় এবং শারীরিকভাবে অসক্ষম মহিলাদের উন্নয়ন স্থায়ীত্বের জন্য খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি তাদের স্বাবলম্বী লক্ষ্যে সরকার প্রতিমাসে মহিলাদের (প্রতিমাসে ৩০ কেজি) চাল প্রদান করে থাকে।
১০ টাকা কেজির চাল আত্মসাতের ঘটনার পর এবার হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুলের বিরুদ্ধে ভিজিডির চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ দুই মহিলা প্রতিকার চেয়ে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ খবর নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল নবীগঞ্জ উপজেলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিও।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল প্রায় দেড় বছর ধরে ভিজিডির সুবিধাভোগী দুই নারীর নামে বরাদ্দকৃত (প্রতিমাসে ৩০ কেজি) চাল ভিজিডির চাল আত্মসাত করে আসছেন। জানা যায়, ওই ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের শাহেলা আক্তার সালমা ও সালেহা বেগম প্রায় দেড় বছর পূর্বে ভিজিডির চালের তালিকায় নিজেদের নাম অর্ন্তভুক্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুলের কাছে ছবি ও ভোটের আইডি কার্ড দেন।
এ সময় চেয়ারম্যান তাদেরকে আশ্বাস্থ করেন তালিকাটি চূড়ান্ত অনুমোদন হয়ে আসলে তারা চাল পাবে। চেয়ারম্যানের এমন আশ্বাসে আনন্দিত হন দরিদ্র পরিবারের এ দুই নারী। এরপর তালিকাভুক্তদের চাল বিতরণ শুরুর খবর পেয়ে চেয়ারম্যানের নিকট গেলে চেয়ারম্যান মুকুল তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলেন।
অনেকদিন অতিবাহিত হলে দুই নারী চালের জন্য চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান মুকুল তাদের নাম তালিকায় উঠেনি বলে জানান।
সুবিধাবঞ্চিত এই দুই মহিলা বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জানতে পারে তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। তাদের নামে বরাদ্দকৃত চাল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করছেন চেয়ারম্যান মুকুল।
পরে গজনাইপুর ইউনিয়নের ভিজিডির তালিকা সংগ্রহ করে দেখা যায়, তালিকায় ক্রমিক নং ৫২তে শাহেলা আক্তার সালমা ও ৫৬ নম্বরে সালেহা বেগম নাম রয়েছে। স্বামীর নাম, গ্রামসহ সব মিলিয়ে দেখা যায় তাদের নামে আসা সরকারী চাল আত্মসাৎ হয়েছে। বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে অসহায় অবস্থায় পরিবার নিয়ে না খেয়ে অনাহারে দিন কাটছে তাদের। এমন অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগী দুই নারী মঙ্গলবার বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
উল্লেখ্য, গজনাইপুর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে তেলেসমাতির ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। এরই মধ্যে নতুনভাবে ভিজিডির চাল আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে তুমুল সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গজনাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুুকুল এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘জাগো নিউজ’কে বলেন, আমি অফিসে না গিয়ে এ বিষয়ে বলতে পারবো না বলে ফোন কেটে দেন।
এ প্রসঙ্গে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান ‘জাগো নিউজ’কে বলেন, গজনাইপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন অনিয়ম ঘটনা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে, এই অভিযোগটি পেয়েছি অবশ্যই তদন্তপূবর্ক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।